গরমের ছুটিতে আপনার ভ্রমণ ডেস্টিনেশন হোক বাড়ির কাছের এই ছোট্ট দ্বীপ

প্রকৃতি নিরাশ করে না কাউকে। ভাঙ্গনের অপরপ্রান্তে গঙ্গাবক্ষে চর পড়ে সৃষ্টি হওয়া দ্বীপের আকার ক্রমশই বাড়তে শুরু করেছে।

গরমের ছুটিতে আপনার ভ্রমণ ডেস্টিনেশন হোক বাড়ির কাছের এই ছোট্ট দ্বীপ
নিজস্ব চিত্র

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: নদীর এপার ভাঙ্গে ওপার গড়ে। আর এভাবেই বদলায় ভৌগোলিক চেহারা। নদীয়ার শান্তিপুরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়া ভাগীরথীর তীরবর্তী গবার চর, চরসাড়াগড়, পালপাড়া, স্টিমার ঘাট, মালিপোতা বয়রা এইরকমই বেশ কিছু এলাকার মানুষের নিজস্ব চাষের জমি, ভিটেমাটি গঙ্গা ভাঙ্গনে তলিয়ে গিয়েছে। সাময়িক কিছু খাদ্যখাবার, ত্রিপল সহযোগিতা পেলেও নতুন করে বাসস্থান বা জীবিকার ব্যবস্থা হয়নি। তবে তাদের মধ্যে যাদের কিছুটা আর্থিক পরিস্থিতি ভালো তাঁরা অন্যত্র বাসস্থান কিনে অন্য পেশায় নিযুক্ত হয়েছেন।
 কিন্তু যাদের কিছুই করার উপায় নেই তাদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতিটা শোচনীয়। 

 প্রকৃতি নিরাশ করে না কাউকে। ভাঙ্গনের অপরপ্রান্তে গঙ্গাবক্ষে চর পড়ে সৃষ্টি হওয়া দ্বীপের আকার ক্রমশই বাড়তে শুরু করেছে। অতীতে বিগত এক দেড়শো বছর ধরে, এভাবেই শান্তিপুর গয়েশপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত হলেও মানিকনগর গ্রাম এখন ভাগীরথী পেরিয়ে  পূর্ব বর্ধমান জেলার মধ্যে। ঠিক একই রকম ভাবে আজ থেকে ১৫- ২০ বছর আগে থেকে ক্রমশ চরের পরিমাণ বৃদ্ধি হয়ে, হুগলি জেলার শক্তিপুর ঘাট এবং নদীয়া জেলার শান্তিপুর বড়বাজার ঘাটের মধ্যে এই চরে আনুমানিক প্রায় দুই হাজার বিঘা জমি, হয়ে উঠেছে শস্য শ্যামলা। মূলত ভাগীরথী তীরবর্তী জমি হারানো মানুষজন সেখানে চাষাবাদ শুরু করেছেন, প্রতিদিন নিয়মিত নৌকা পারাপারের  মাধ্যমে।

জানা গিয়েছে, স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছে তিনটি পরিবার। যার মধ্যে একজন, একটি মন্দির স্থাপন করেছেন। চাষাবাদ করেন ওখানেই । অপর একটি পরিবারের সদস্য বিধান বিশ্বাস জানান, তিনি- তার বাবা এই চরে থাকেন। দিদি বিশখা বিশ্বাস নিজে ডিঙি চালিয়ে এসে দিনে দুবার রান্না-বান্না করে দিয়ে যান। চারবার সহ পশুপালনে তারা এখন নতুনভাবে বাঁচার পথ দেখেছেন। 
অন্যদিকে সবিতা বিশ্বাস, ওই দ্বীপে বসবাস করা তিনটি পরিবারের পাঁচ জন মানুষের মধ্যে একমাত্র মহিলা। তিনিও নিজে নৌকা চালিয়ে, মাঝেমধ্যে বাজার হাট করে নিয়ে আসেন শান্তিপুর থেকে। রান্নাবান্না সহ, পশু প্রাণী প্রতিপালন ও স্বামীর সঙ্গে সারাদিন ব্যস্ত থাকেন কৃষিকাজে।

 তিনি বলেন, ''এতদিন মানুষের মাঝে বাস করে এসে, এই নির্জন দ্বীপে কয়েকজন বাস করতে কোনও অসুবিধাই নেই। বরং সূর্য ওঠা সূর্য ডোবা, সারাদিন ভাগীরথীর উপর দিয়ে বয়ে আসা দূষণমুক্ত বাতাস , মন এবং শরীরকে অনেক সুস্থ রেখেছে। তবে শান্তিপুরের ছোটখাটো পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলে যায় কিনা সে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, ওই দ্বীপের বাসিন্দারা জানান, একটা পার্ক হওয়ার জন্য এন আর জি প্রকল্পের ১০০ দিনের কাজে কল বসানো, রাস্তা নির্মাণ, এবং তিনটি ঘর নির্মাণ হয়েছিল, যার এখন ভগ্নদশা। তবে বেলঘড়িয়া 2 নম্বর পঞ্চায়েত প্রধান দীপক মন্ডল জানান, পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠার জন্য সরকারি মহলে চিন্তাভাবনা চলছে।