স্বপ্নভঙ্গে উত্তাল ফ্রান্স, প্যারিসে জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ

এর আগে মরোক্কো কাছে বেলজিয়াম হেরে যাওয়ার পর ব্রাসেলসে ব্যাপক অশান্তি ছড়ায়। শহরের পথে একের পর এক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়  বিক্ষোভকারীরা।

স্বপ্নভঙ্গে উত্তাল ফ্রান্স, প্যারিসে জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: কাতারে উত্তেজনার পারদ চড়িয়েও হয়নি ফরাসি বিপ্লব। অল্পের জন্য সবুজ গালিচায় অপূর্ণ থেকে যায় এমবাপের শিল্প। বেলা শেষে শেষের কবিতা লেখেন মেসিরাই। স্বপ্নভঙ্গের এহেন রাতে উত্তাল হয়ে উঠে ফ্রান্স। সমর্থকদের বুকের আগুনের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে রাস্তায় রাস্তায়। ক্রমে তা ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠি, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ছুটে গেলে জনতার সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। 

রবিবার আর্জেন্টিনার সঙ্গে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে পরাজিত হয় ফ্রান্স। কিলিয়ান এমবাপের মরণপণ লড়াইয়ে টাইব্রেকারে ম্যাচ নিয়ে গেলেও মেসিদের রুখতে ব্যর্থ হন তাঁরা। প্রায় হাতের মুঠোয় চলে আসা ম্যাচে হার মানতেই পারছেন না ফরাসি সমর্থকরা। রবিবার রাতে তাই প্যারিস, নিস, লিঁও-সহ ফ্রান্সের অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। উত্তেজিত ফুটবল ভক্তদের সামলাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রান্সের উত্তাল রাজপথের টুকরো টুকরো ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গোটা দেশে ১৪ হাজার পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল খেলা শেষে এমবাপেকে সান্ত্বনা দিতে দোখা যায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে। তবে তারপরই তাঁর দেশে পরিস্থিতি ঘোরাল হয়ে উঠে। বলে রাখা ভাল, ফাইনাল ম্যাচ দেখার জন্য প্যারিসে বা অন্য কোনও শহরে ‘জায়ান্ট স্ক্রিন’ বসানোর অনুমতি দেয়নি ফ্রান্সের সরকার। ফলে সকলে এক জায়গায় জড়ো হয়ে বড়পর্দায় খেলা দেখা হয়নি। রবিবার ফাইনাল ম্যাচ দেখার জন্য শহরের নানা প্রান্তে বার কিংবা রেস্তরাঁয় জড়ো হয়েছিলেন মানুষ। কিন্তু তাঁরা স্বপ্নভঙ্গের সাক্ষী থেকেছেন। অধরা থেকে গিয়েছে বিশ্বকাপ। আর সেই আক্রোশ আছড়ে পড়েছে রাজপথে। 

রবিবার বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ দেখানোর আয়োজন করে ফ্রান্সের পানশানাগুলি। ম্যাচ শুরু সময় থেকেই সেখানে ভিড় করেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। দ্বিতীয়ার্ধে পরপর ২টি গোল ফরাসি বাহিনী শোধ করতেই শুরু হয়ে যায় উৎসব। ওই সময় অনেকেই বিপজ্জনকভাবে আকাশের দিকে বাজি ছুড়তে শুরু করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ম্যাচে এমবাপেরা হেরে গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। ফরাসি পুলিসের দাবি, পাবের পার্কিং লট থেকে গাড়ি রাস্তায় নিয়ে এসে সমানে হর্ণ বাজিয়ে প্রতিবাদ শুরু করেন উগ্র সমর্থকরা। অনেকে গাড়ির ছাদে উঠে ফরাসি কোচ ও ফুটবলারদের নামে গালিগালাজ দিতে থাকেন। অনেকে আবার শহরের সৌন্দর্যানের জন্য রাখা ফোয়ারার উপর উঠে পড়েন। এদের সকলেরই নিশানায় ছিলেন দুই ফরাসি ফুটবলার। বিশ্বকাপ ফাইনালে টাইব্রেকারে গোল করতে ব্যর্থ হন তাঁরা। 

প্রসঙ্গত, এর আগে মরোক্কো কাছে বেলজিয়াম হেরে যাওয়ার পর ব্রাসেলসে ব্যাপক অশান্তি ছড়ায়। শহরের পথে একের পর এক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়  বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ময়দানে নামে পুলিশ।বেলজিয়াম ও মরোক্কোর সমর্থকরা মুখোমুখি হওয়ার পরেই চরম আকার নেয় অশান্তি। কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপ লিগের ম্যাচে তুলনায় দুর্বল মরোক্কোর কাছে হারে শক্তিশালী বেলজিয়াম।