আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়, আনন্দে গ্যালারিতে পোশাক খুলে বিপাকে তরুণী

শোনা যাচ্ছে, কাতারি প্রশাসনের তরফে ওই তরুণীর খোঁজ করা হচ্ছে। ভাইরাল ছবি দেখে তাঁকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছে প্রশাসন।

আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়, আনন্দে গ্যালারিতে পোশাক খুলে বিপাকে তরুণী

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: ৩৬ বছর পর বিশ্বজয়। প্রতি মুহূর্তে পটপরিবর্তনের ম্যাচ। বাড়তি অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণের ম্যাচ। অ্যান্ড ফাইনালি হি ইজ আউট অফ দ্য শ্যাডো অফ দিয়েগো মারাদোনা', কাতারের লুসেইল স্টেডিয়ামের আকাশ তখন নীল-সাদা রঙের মেঘে আচ্ছন্ন। ভাষ্যকারের মন্তব্য প্রকট হয়ে বাজছে মেসি ভক্তদের কানে। 

আর্জেন্টিনার জাতীয় সংগীতে মুখরিত গোটা স্টেডিয়াম। অবশেষে বিশ্বকাপ জিতেছেন সকলের প্রিয় 'লা পুলগা'। হাসিমুখে গোল্ডেন বল নিতে উঠে বিশ্বকাপকে চুমু খেলেন লিওনেল মেসি। যেন দীর্ঘ অপেক্ষার পর প্রেয়সীর ঠোঁটে ঠোঁট রাখলেন। সম্ভবত বিশ্বকাপের সর্বকালের সেরা ফাইনাল। আর সেই ম্যাচে যদি প্রিয় দল জিতে যায়, তাহলে আবেগের আতিশয্য তো থাকবেই। সেই আবেগের বশেই বিশ্রী ভুল করে ফেললেন আর্জেন্টিনার তরুণী সমর্থক। দলের জয়ের পর ভরা গ্যালারিতেই পোশাক খুলে ফেললেন তিনি। আর তাতেই এখন চরমে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। 

আগেই কাতারের তরফে বলা হয়েছিল, ভিন দেশ থেকে আসা মহিলাদের পোশাক হবে ভদ্রস্থ। শরীরে ঊর্ধ্বাংশ যেন ঠিক ভাবে ঢাকা থাকে। অশালীন পোশাক পরা মহিলাদের স্টেডিয়ামে ঢুকতে দেওয়া হবে না। কাতারের আইন অনুযায়ী মহিলাদের গোটা শরীর ঢাকা পোশাক পরতে হয়। এর অন্যথা হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। এক্ষেত্রেও সেই আইনই কার্যকর হবে। ফলে গ্যালারিতে পোশাক খোলা ওই তরুণীকে ভালমতোই বিপাকে পড়তে হতে পারে। ফিফার ওয়েবসাইটে স্পষ্ট করা হয়েছে, যে দেশে খেলা সেখানকার নিয়ম মানতে হবে। সেখানকার সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধা করতে হবে। খোলামেলা পোশাকে স্টেডিয়ামে যাওয়া চলবে না। ক্লিভেজ দেখানো যাবে না, মিনি স্কার্ট পরা যাবে না। অন্যথায় জেলবন্দি হতে হবে। জরিমানাও হতে পারে। কাঁধ, কনুই এবং পা ঢেকে আসতে হবে। আঁটসাঁট পোশাক পরা যাবে না। নিষেধাজ্ঞা শুধু স্টেডিয়ামে নয়, সর্বত্র কার্যকর হবে। অথচ এই তরুণী খোলা স্টেডিয়ামেই পোশাক খুলে ফেললেন। 

শোনা যাচ্ছে, কাতারি প্রশাসনের তরফে ওই তরুণীর খোঁজ করা হচ্ছে। ভাইরাল ছবি দেখে তাঁকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছে প্রশাসন। জানা যাচ্ছে, শনাক্ত করা গেলেই ওই তরুণীকে গ্রেফতার করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে স্থানীয় নিয়ম অনুযায়ী শাস্তির মুখে পড়তে হবে তাঁকে। হতে পারে জেল-জরিমানাও। এদিকে রক্তের গতি বাড়িয়ে দেওয়া ফাইনাল জিতে ৩৬ বছরের ট্রফি খরা কাটিয়েছে আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসিদের খুশির মুহূর্তে সামিল হচ্ছে গোটা বিশ্ব। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে অভিনন্দন জানান আর্জেন্টিনা দলকে। চলতি বছরের অক্টোবর মাসেই মেসি জানিয়ে দিয়েছিলেন, 'দিস উইল বি মাই লাস্ট ওয়ার্ল্ড কাপ… ফর শিওর।' কঠিন সিদ্ধান্তে অবিচল থাকবেন, সাফ বলেছিলেন। অর্থাৎ সুযোগ একটাই। আদৌ তার সদব্যবহার করতে পারবেন লিও মেসি? প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছিল গোটা বিশ্বে। 

'এবার মেসি জিতছেন', আর্জেন্টিনার ভক্তরা কিন্তু প্রথম থেকেই নিশ্চিত ছিলেন। হয়ত মেসিও নিজেও জানতেন সে কথা। এদিন 'জিততে হবে' মনোভাব নিয়ে খেলতে নামেননি তিনি। বরং মুখের প্রতিটি অভিব্যক্তিতে 'জিতবই' বার্তা দিচ্ছিলেন মেসি। বিশ্বকাপকে আর মরীচিকা হতে দেবেন না, পণ নিয়েছিলেন। আর তাই ফুটবল জগতের নয়া সুপারস্টার এমবাপের 'বাড়বাড়ন্ত' দেখেও মুখের হাসিটা ধরে রেখেছিলেন। শেষ হাসি হাসলেন মেসিই। বিশ্বজয় হল আর্জেন্টিনার।