'সন্তানসম', স্বপ্নদীপের মৃত্যুর চারদিন পর কেঁদে ভাসালেন রেজিস্ট্রার

যাদবপুরের ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নিয়ন্ত্রক UGC। আগামী বুধবার Jadavpur University-তে আসছে ইউজিসির ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

'সন্তানসম', স্বপ্নদীপের মৃত্যুর চারদিন পর কেঁদে ভাসালেন রেজিস্ট্রার
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু (নিজস্ব চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: ছাত্রমৃত্যুতে সরগরম যাদবপুর। ঘটনার চারদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ে এলেন রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু। স্বপ্নদীপ কুন্ডুর মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন তিনি। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কার্যত কান্নায় ভেঙে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু। এদিন তিনি বলেন, ''আমি অসুস্থ ছিলাম। তাই মঙ্গলবারই মেডিক্যাল লিভ নিয়েছিলাম। চিকিৎসকের কথায় বিশ্রাম নিচ্ছিলাম বলেই ফোন বন্ধ ছিল। আমি মর্মাহত। কোনও মায়ের কোল খালি হোক চাই না।'' 

স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় গোটা রাজ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে র‍্যাগিংয়ের ঘটনা নিয়ে যেখানে সর্বত্র হইহই রব সেখানে রেজিস্ট্রার কী করে এতদিন চুপ ছিলেন? এদিন সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ''হাঁটুর ব্যথা। তাই আসতে পারিনি। আজও কষ্ট করেই আসতে হয়েছে। তা ছাড়া আমার হাই প্রেসার। এই বিষয়গুলো একদম নিতে পারি না। আভ্যন্তরীণ কমিটিও তদন্ত করছে। পুলিশও তদন্ত করছে। আমি চাই, দোষীরা শাস্তি পাক।'' 

এদিকে যাদবপুরের ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নিয়ন্ত্রক UGC। আগামী বুধবার Jadavpur University-তে আসছে ইউজিসির ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল। কী করে এমন ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখতে যাদবপুরে আসছেন তাঁরা। তার আগে যাদবপুরের রেজিস্ট্রারের কাছ থেকে তাঁর লেটার হেডে গোটা ঘটনাটির বিশদ রিপোর্ট জানাতে বলা হয়েছে। ইউজিসির তরফে সোমবারই এ ব্যাপারে ফোন আসে যাদবপুরের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জুর কাছে। তার আগে সোমবারই অ্যান্টি র‍্যাগিং কমিটির বৈঠক বসছে যাদবপুরের ঘটনাটি নিয়ে। আর সোমবারই যাদবপুরের রেজিস্ট্রার এসে পৌঁছন যাদবপুর ক্যাম্পাসে। 

সূত্রের খবর, স্নেহমঞ্জু বলেন, ''আমি অত্যন্ত মর্মাহত। এ আমার সন্তান চলে যাওয়ার মতো দুঃখ। আমি কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। মঙ্গলবার থেকে মেডিক্যাল লিভের জন্য আবেদন করেছিলাম। বুধবার এই ঘটনা ঘটে। আমার ফোন বন্ধ ছিল। আমি জয়েন্ট রেজিস্ট্রার সঞ্জয় গোপাল সরকারকে সমস্ত দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছিলাম। আমি বাড়ি থেকে সমস্ত রিপোর্ট নিয়েছি। এই ঘটনার পর যা যা করার সব রেজিস্ট্রারের অফিস থেকেই করা হয়েছে। আপনারা আপনাকে মাফ করুন, আমরা প্রাণ পণ চেষ্টা করব।'' 

প্রসঙ্গত, স্বপ্নদীপের মৃত্যুতে প্রথম থেকেই উঠে আসছিল র‍্যাগিংয়ের তত্ত্ব। হস্টেলে থাকার নামে অত্যাচার সিনিয়রদের। সিনিয়রদের জন্য জল, খাবার, মদ এনে দেওয়ার মতো চাঞ্চল্যকর অভিযোগও উঠে আসছে তদন্তে। অভিযোগ, হস্টেলে ঢোকার প্রথম রাতেই র‍্যাগিংয়ের শিকার হন স্বপ্নদীপ। শুধু তাই নয়, ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক পড়ুয়া অভিযোগ করে বলেন, 'সিনিয়বরদের ঘরে গিয়ে হেনস্থা, অত্যাচারের মত ঘটনা ঘটে যাদবপুরে। হাসা নিষেধ ছিল।' ফোন নিয়ে সিনিয়রদের ঘরে যাওয়াও নিষেধ ছিল বলে অভিযোগ করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পড়ুয়া। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় প্রাক্তন পড়ুয়া সৌরভ চৌধুরী ছাড়াও আরও ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।