BJP Bengal: BJP নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে নদীগ্রাম থানায় ৪৭টি FIR, রাজ্যকে ভর্ৎসনা হাইকোর্টের

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শুভেন্দু অধিকারীর প্ররোচনায় হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তার কোনও প্রমাণ আপাতত দিতে পারেনি কেউ। সব গুলোই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। জানুন বিস্তারিত...

BJP Bengal: BJP নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে নদীগ্রাম থানায় ৪৭টি FIR, রাজ্যকে ভর্ৎসনা হাইকোর্টের
ফাইল চিত্র।।

রিমিক মাঝি, কলকাতা: এক মাসে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে নদীগ্রাম থানায় ৪৭টি এফআইআর করা হয়ছে। মামলায় রাজ্যকে চরম ভর্ৎসনা হাইকোর্টের। রাজ্যের কাছে ওই ৪৭টি কেসের তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট তলব কলকাতা হাইকোর্টের। নির্দেশ বিচারপতি অমৃতা সিনহার। আগামী ২ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি।

গত ১৪ মে থেকে ৩৮-৩৯ দিনের মধ্যে ৪৭টি এফআইআর দায়ের হয়েছে মাত্র একটি থানায়। এর প্রায় সব কটি মামলাই বিজেপি নেতা সমর্থকদের বিরুদ্ধে। মাত্র এই ক'দিনের মধ্যে একটি থানায় এতগুলো এফআইআর কীভাবে? নন্দীগ্রাম থানার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে মামলা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মামলাকারীর বক্তব্য, প্রায় সব কটি মামলাই পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে করেছে। বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের হেনস্থা করতেই পুলিশ এটা করেছে। বুধবার সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে।

আবেদনকারী আইনজীবী পিএস পাটোয়ালিয়া জানান, ৪৭টি এফআইআর-এর মধ্যে ৩৪টি একই ব্যক্তির হাতের লেখা। শেখ বশির আহমেদ নামে এক ব্যক্তি ৩৪ টি এফআইআর করেছেন। তিনি তৃণমূল নেতা হিসাবে পরিচিত। বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধেও রয়ছে মামলা। একাধিক অভিযোগ। অনিতা মন্ডল নামে এক মহিলা অভিযোগ করেছেন, শুভেন্দু অধিকারী মদতে তাঁর দোকান ভাঙচুর করেছে বিজেপি নেতা ও সমর্থকরা। একধিক অভিযোগের কোনওটা হুমকি দেওয়ার, কোনওটা মারধর, কোনওটা লুঠের।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শুভেন্দু অধিকারীর প্ররোচনায় হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তার কোনও প্রমাণ আপাতত দিতে পারেনি কেউ। সব গুলোই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। লোকসভা ভোটের আগে বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ভোটের প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টির উ্দেশ্যে এই কাজ করেছে শাসক দল। শুধু এখনই নয়, শুভেন্দু অধিকারী যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচনে জিতে আসেন, তখনও তাঁর বিরুদ্ধে মামলার বন্যা বয়ে যায়। সেই সময় কিছু অভিযোগকারীদের  ঠিকানা, বাবার নামও পাওয়া যায়নি। তখন শুভেন্দু অধিকারীর আবেদনের মামলায় হাইকোর্ট পুলিশের সমালোচনা করে। হাইকোর্ট সব এফআইআর-এর উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে দেয়। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য গেলেও সুপ্রিম কোর্ট তাদের আবেদনে গুরুত্ব দেয়নি।

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/TMC-MLA-Sayantika-Banerjee-and-Rewat-Hossain-setting-infront-of-assembly-for-taking-oath-from-governor-cv-Anand-bose

রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত জানিয়েছেন, শুভেন্দু অধিকারীর এই মামলা করার অধিকার নেই। তিনি কিছু আশঙ্কা করে এগোচ্ছেন। কমিশন ও হাইকোর্টের কিছু নিষেধাজ্ঞা ছিল। ভোটের আগে এবং ভোটের মধ্যে একাধিক জায়গায় তিনি নিয়ম ভেঙেছেন। তাই তাঁর নামে অভিযোগ হয়ছে। সেটা তিনি নিজেও জানেন ।

বিচারপতি অমৃতা সিনহা প্রশ্ন তুলে বলেন, ''কে এই শেখ বসির আহমেদ? আবেদনকারী বলছে আপনারা বেছে বেছে গ্রেফতার করছেন? কতজন শাসক দলের কর্মীকে গ্রেফতার করেছেন ?''  

রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, ''আমি জানি না কে এই বশির আহমেদ। পুলিশ বলছে তিনি ওই গ্ৰামের বাসিন্দা। পুলিশের কাজ অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করা। কে অভিযোগ করছে, সেটা প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে গুরুত্ব পায় না। সুমন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ৫টি এফআইআর হয়ছে। এখানে এমনও আছে, ৩৪ জন অভিযুক্তের মধ্যে এক জন গ্রেফতার হয়েছেন। আবার ১৭ জন অভিযুক্তের মধ্যে তিনজন গ্রেফতার হয়ছে। আবার ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও একজনও এখনও গ্ৰেফতার হয়নি। এখনও পর্যন্ত মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মানে এই নয় শুধু বিজেপি কর্মীরাই গ্রেফতার হয়ছে। পুলিশ দল দেখে গ্রেফতার করবে কেনো ? এফআইআর-এ সব তথ্য থাকবে এমনটা নয়। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ তথ্য প্রমাণ জোগাড় করার চেষ্টা করে। বিমল গুরুঙের বিরুদ্ধে পুলিশ ১০৫ এর বেশি এফআইআর করেছে।'' 

আরও পড়ুন:https://tribetv.in/APP-Cab-driver-allegedly-misbehave-with-passenger-at-night-in-Kolkata-areas

বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেন, 'ওপেন এন্ডেড এফআইআর কেন? এই কারণেই আবেদনকারীরা গ্রেফতারের আশঙ্কা করছেন। এফআইআর গুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে যে কোনও একজন পেশাদার লোক এফআইআ-এর বয়ান তৈরি করে দিয়েছেন।'