গুজরাটে ব্রিজ বিপর্যয়, দুর্ঘটনা রুখতে তৎপর রাজ্য সরকার

 গত রবিবার গুজরাটের মোরবিতে ব্রিটিশ আমলের ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ে। ছটপুজোর দিনে সেতু বিপর্যয়ে অন্তত ১৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গুজরাটে ব্রিজ বিপর্যয়,  দুর্ঘটনা রুখতে তৎপর রাজ্য সরকার

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: রবিবার সন্ধ্যার গুজরাটের অভিশপ্ত ব্রিজ বিপর্যয়ের থেকে শিক্ষা নিয়ে তটস্থ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসন। নাগরিকদের সুরক্ষার কথা ভেবে তড়িঘড়ি নেওয়া হল একাধিক পদক্ষেপ।

 গত রবিবার গুজরাটের মোরবিতে ব্রিটিশ আমলের ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ে। ছটপুজোর দিনে সেতু বিপর্যয়ে অন্তত ১৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। যখন এই ঝুলন্ত ব্রিজের তার ছিঁড়ে যায় তখন নারী ও শিশুসহ প্রায় ৫০০ লোক ছিলেন ব্রিজের উপরে। ব্রিজ ভেঙে নদীতে পরে যান তাঁরা। সেতু দুর্ঘটনার একদিন পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সমস্ত কেবল সেতুর অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।   

সূত্রের খবর, রাজ্যের সমস্ত কেবল সেতুর নিরাপত্তা ও অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে পূর্ত বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। 

নবান্ন সূত্রে খবর, এই কেবল সেতুগুলি প্রধানত ডুয়ার্স অঞ্চল এবং উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং পাহাড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। মোরবির মতো ভবিষ্যতে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য পুরনো সব কেবল সেতু খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের মন্ত্রী পুলক রায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেবল সেতুগুলির অবস্থা সম্পর্কে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সমস্ত জেলার পূর্ত বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও  মঙ্গলবার নবান্নে রাজ্যের শীর্ষ আমলা ও ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী। 

পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে সেকারণে জেলার সেতুগুলির ক্ষেত্রে অনুরূপ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল ও বিরোধী বিজেপি-র মধ্যে মোরবি কেবল সেতু নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। যদিও তৃণমূল নেতারা দাবি করেছেন যে, গুজরাটে ব্যাপক দুর্নীতির উদাহরণ হল এই ব্রিজ ভেঙে পড়া। পাল্টা বিজেপির সমর্থকরা পশ্চিমবঙ্গে সেতু ভেঙে যাওয়ার আগের ঘটনাগুলির তুলে এনে তৃণমূলকে কোণঠাসা করতে উদ্যোগী। 

অন্যদিকে, সেতু বিপর্যয়ে মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশাপাশি আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন। মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে গুজরাট সরকার।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ র মার্চে কলকাতায় বিবেকানন্দ রোড ফ্লাইওভার ভেঙে যাওয়ায় ২৭ জন নিহত হন। তারপর থেকেই কলকাতার বিশেষ সেতু ও ফ্লাইওভার নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়।