উপাচার্যদের থেকে সাপ্তাহিক রিপোর্ট তলব রাজভবনের

জগদীপ ধনখড়ের মতো রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কড়া নন বলে অভিযোগ ছিল বিজেপির। কিন্তু তাঁর পদক্ষেপে ধনখড়ের ছায়া দেখা গেল বলে মনে করা হচ্ছে

উপাচার্যদের থেকে সাপ্তাহিক রিপোর্ট তলব রাজভবনের

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে রিপোর্ট দিতে হবে রাজভবনে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের নয়া নির্দেশিকায় বিতর্ক। সূত্রের খবর, রাজভবনের তরফে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের কাছে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, যে কোনও আর্থিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে উপাচার্যরা রাজ্যভবনের অনুমতি নেবেন।

জগদীপ ধনখড়ের মতো রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কড়া নন বলে অভিযোগ ছিল বিজেপির। কিন্তু এবার তাঁর পদক্ষেপে ধনখড়ের ছায়া দেখা গেল বলে মনে করা হচ্ছে। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরগরম বাংলা। আর এই প্রেক্ষাপটে কড়া অবস্থান নিতে দেখা গেল রাজভবনকে। তাও আবার সরাসরি উচ্চশিক্ষায় নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত। পূর্বসূরি জগদীপ ধনখড়ের পর এবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আর্থিক লেনদেনেও কড়া নজর রাখতে চান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশিকা পাঠাল রাজভবন। আর রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে রিপোর্ট দিতে হবে রাজভবনে।

এদিকে বড়লাটের নয়া নির্দেশিকায় ধনখড়ের ছায়া দেখছেন অনেকে। রাজভবনের নয়া বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, যে কোনও আর্থিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে উপাচার্যরা রাজভবনের অনুমতি নেবেন। উপাচার্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্মের রিপোর্ট সরাসরি জমা দেবেন রাজভবনে। প্রতি সপ্তাহে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এমনকী চাইলে সরাসরি রাজভবনের সঙ্গে টেলিফোনেও যোগাযোগ রাখতে পারেন উপাচার্যরা। এতদিন রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যরা শিক্ষা দফতরে রিপোর্ট পাঠাতেন। তাঁদের নিয়োগ থেকে বদলি সবটাই রাজ্যের সুপারিশ মেনে সই করতেন রাজ্যপাল। সেখানে এই নয়া নির্দেশিকার অর্থ, উপাচার্যদের কাজকর্মের নিয়ন্ত্রণ রাজভবনের হাতে নিয়ন্ত্রণ হওয়ার সামিল বলে মনে করছেন অনেকে।

রাজভবনে তাঁর প্রবেশের পর থেকে এ পর্যন্ত রাজ্যের শিক্ষা দফতরের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলার বার্তাই দিয়ে আসছিলেন সি ভি আনন্দ বোস। এমনকী, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে পাশে বসিয়ে সমন্বয় সাধন করে চলার বার্তাও দিয়েছিলেন। 

রাজ্যপালের স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, ''শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনও দ্বন্দ্ব নয়। বাংলা নিজের শিক্ষা, সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত। আমাদের সকলকে সেই জায়গা ধরে রাখতে হবে।'' রাজভবনের নয়া বিজ্ঞপ্তিতে কিন্তু সেই সমন্বয় ভুলে দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। উল্লেখ্য, জগদীপ ধনকড় রাজ্যপাল থাকাকালীন রাজভবন এবং শিক্ষা দপ্তরের দূরত্ব চরমে উঠেছিল। এমনকী ধনকড়কে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদ থেকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে সেই পদে আনার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। সিভি আনন্দ বোস আসার পর রাজ্যের তরফেই তাঁর সঙ্গে সুসম্পর্কের বার্তা দেওয়া হয়। সেই সুসম্পর্ক কি এবার ইতি পড়তে চলেছে? রাজ্যপালের নতুন পদক্ষেপে প্রশ্ন উঠছে।