অবৈধভাবে নদীর গতিপথ পরিবর্তনকে ঘিরে চাঞ্চল্য

বর্ষায় চরম ক্ষতির আশঙ্কা কৃষকদের

অবৈধভাবে নদীর গতিপথ পরিবর্তনকে ঘিরে চাঞ্চল্য

কৃত্রিমভাবে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করার ঘটনা বিরল নয়। তবে সেই গতিপথ পরিবর্তনের পূর্বে এলাকার মানুষদের সুবিধা-অসুবিধার কথা ভাবতে হয় সরকারকে। কিন্তু অবৈধভাবে শিলিগুড়িতে কৃত্রিমভাবে স্বর্ণমতি নদীর গতিপথ পরিবর্তণ করায় সমস্যায় পড়েছেন নদী সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। ভেঙে পড়ছে নদীর বাঁধ। ফলে আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকেরা। 

এবার কৃত্রিমভাবে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা হল স্বর্ণমতি নদীর। আর্থমুভার দিয়ে অবৈধভাবে স্বর্ণমতি নদীর স্বাভাবিক গতিপথ পরিবর্তনের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের খড়িবাড়ির ব্লকে জোরপাকুড়ি জোত এলাকার ঘটনা। সূত্রের খবর, সম্প্রতি নদীর পাশে থাকা নিজস্ব জমি বাঁচানোর জন্য স্থানীয় কয়েকজন কৃষক নদীর মাটি কেটে নদীর প্রায় ১০০মিটার গতিপথ পরিবর্তন করেন। এই গতিপথ পরিবর্তনের ফলে সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে অন্যান্য কৃষকেরা। বর্ষার সময় এই নদী এমনিতেই ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। কৃত্রিম নদীর পাড় এখনই ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ছে। সেই সময় নদীর পাশে থাকা কৃষকদের জমি ও ফসল নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

তবে কার মদতে নদীর পরিবর্তন করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কৃত্রিমভাবে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত কৃষকদের বক্তব্য, এলাকার কৃষকদের সুবিধার্থে এবং রাস্তাকে বাঁচানোর জন্য এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যকে জানিয়ে এই কাজ করা হয়েছে।

অপরদিকে, নদীর উল্টো পাশের কৃষকদের দাবি, নদীর গতিপথ কৃত্রিমভাবে পরিবর্তনের ফলে বর্ষাকালে চাষের জমি ও ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাঁদের দাবি, স্বর্ণমতি নদীকে পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হোক। 

ঘটনার খবর পেয়ে খড়িবাড়ি পানিশালী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পরিমল সিংহ, খড়িবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি ঘটনাস্থলে পৌঁছন। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পরিষ্কার জানিয়ে দেন, এইভাবে অবৈধভাবে নদীর গতিপথ কোনদিন পরিবর্তন করা যায় না। তবে সমস্ত বিষয়টি বিডিও এবং সেচ দপ্তরকে জানানো হবে। তিনি উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

স্বর্ণমতি নদীর গতিপথ পরিবর্তনের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন সেচ দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রিয়ম গোস্বামী। তিনি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, সহসভাপতির ও অভিযুক্ত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অভিযুক্ত কৃষকদের দ্রুত নদীকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন।

তবে নদীর গতিপথ পরিবর্তণের এমন ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান এবং অভিযুক্ত কৃষকদের। কারণ কাউকে না জানিয়ে এমনকি সেচ দফতরের আধিকারিকদের না জানিয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তণ করা সম্পূর্ণ বেআইনি বলেই দাবি করেছেন গ্রামের সিংহভাগ মানুষ। তবে নদীকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেচ দফতর থেকে তা কতদিনে হয় সেটাই এখন দেখার।