অভাবেই জন্ম প্রতিভার, ইশার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত নদিয়া

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: ভাঙা ঘরে চাঁদের আলো! হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। অদম্য পরিশ্রম আর মনের জোরে সাফল্যের শিখর ছুঁয়েছে ইশা। নদিয়া জেলার শান্তিপুর ব্লকের বড় জিয়াকুড় গ্রামের প্রথম শ্রেণীর পড়ুয়া ইশা রাজোয়ার। সবাইকে তাক লাগিয়ে ২.৯৭ মিটার দীর্ঘ লং জাম্পে জেলার মধ্যে প্রথম হয়ে ক্রীড়া মহলে সাড়া ফেলে দিয়েছে ছোট্ট এই খুদে। 

 প্রথম সুযোগে কিস্তিমাত! প্রত্যন্ত গ্রাম্য স্কুল থেকে জেলায় প্রথম স্থান। অবাক করেছে সবাইকে। এর আগে ব্লক ও মহাকুমা স্তরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়ার সুবাদে জেলা স্তরে খেলার ছাড়পত্র পায় ইশা। ইশার স্বপ্ন এই সাফল্য ধরে রেখে বড় হয়ে দেশের জন্য অলিম্পিকে পদক আনা। আগামী দিনে দেশের জন্য স্বর্ণপদক এনে নাম উজ্জ্বল করুক। এমনটাই স্বপ্ন ইশার বাবা-মায়ের। তবে বাধা একটাই- নুন আনতে পান্তা ফুরানো সংসার। তবে শান্তিপুরের এই খুদের সাফল্য উদযাপনে এগিয়ে এসেছেন সর্বস্তরের মানুষ। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ছোট্ট ইশার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত হয়ে শুক্রবার সকাল থেকে মিষ্টি বিলি করেন এলাকায়। তিনি জানান,  গ্রামের এই বিদ্যালয় থেকে এর আগেও খেলায় বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রী পুরস্কার পেলেও জেলা স্তরে এই প্রথম। অভাবেই প্রতিভার জন্ম হয়। আগামী দিনে সবরকম ভাবে ইশার পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি। 

এত সাফল্যের পরেও চিন্তা যাচ্ছে না ইশার বাবার। হয়তো উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেলে দেশের নাম উজ্জ্বল করার ক্ষমতা রয়েছে মেয়ের।   অভাবের সংসারে কী ভাবে মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করবেন তা ভেবে আঁতকে উঠছেন ইশার বাবা। তিনি জানিয়েছেন, অভাবের কারণে প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও, কোনদিন ট্রেনিং দেওয়া সম্ভব হয়নি। এবছর পঞ্চায়েত এবং বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পাশে থাকার আশ্বাস পেয়ে ইশা যে অনেক দূর পৌঁছবে সেই আত্মবিশ্বাস জন্ম নিয়েছে। যে স্কুলের প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে ইশারর এই সাফল্য সেই বড় জিয়াকুড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান, ক্রীড়া সবসময় উপেক্ষিত থাকে আমাদের ছাত্রীর সাফল্য এবার থেকে একটি করে পিরিয়ড শুধুমাত্র ক্রীড়া প্রশিক্ষণের জন্য রাখা থাকবে এবং সেটা সারাবছর। তিনি আরও জানান, আগামীতে রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতা জলপাইগুড়িতে হতে চলেছে সেখানেও , ইশাই চ্যাম্পিয়ন হবে। 

কথায় বলে অভাবেই জন্ম প্রতিভার। খুদে ইশার মধ্যেও রয়েছে জেতার খিদে প্রবল। সেই জেতার খিদেকে পাথেয় করে ইশাকে আরও অনেক দূর স্থির সংকল্পে এগিয়ে যেতে হবে। তার ক্রীড়া নৈপুণ্যে বাংলার ক্রীড়াজগৎ উজ্জ্বল ও বর্ণময় হবে এমনই আশা ক্রীড়ামহলেরও।