দারিদ্রতাকে হার মানিয়ে অধ্যাপক হওয়ার পথে একধাপ এগোল কার্তিক

কার্তিক জানান,অধ্যাপক হয়ে গবেষণা করার ইচ্ছা রয়েছে তাঁর। তাদের সমাজের অনেক মানুষজন এখনও জঙ্গলে বসবাস করেন।

দারিদ্রতাকে হার মানিয়ে অধ্যাপক হওয়ার পথে একধাপ এগোল কার্তিক

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: তীব্র ইচ্ছা আর অদম্য জেদের কাছে কোনও বাধাই যে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে না ফের মিলল তার প্রমাণ। দারিদ্রতাকে পিছনে ফেলে 'সেট' পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নজর কাড়লেন ঝাড়গ্রাম জেলার প্রত্যন্ত এক গ্রামের বাসিন্দা কার্তিক। কার্তিক শবর সেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় সম্ভবত দেশে কোনও লোধা শবর সম্প্রদায়ের যুবক এই প্রথম অধ্যাপক হতে চলেছেন।

 কার্তিক জানান,অধ্যাপক হয়ে গবেষণা করার ইচ্ছা রয়েছে তাঁর। তাদের সমাজের অনেক মানুষজন এখনও জঙ্গলে বসবাস করেন। তারা পরিবেশ ও প্রকৃতিকে রক্ষা করে চলেছেন। শুধু তাই নয় সে তাদের লোধা সমাজের পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক ছেলে মেয়েদের সাহায্য করতেও চান।'কার্ত্তিকের বাবা নির্মল শবর ও মা পুষ্প শবর দিনমজুর। 

কার্ত্তিকের বাড়ি ঝাড়গ্রাম জেলার বিনপুর থানার আশাকাঁথি গ্রামে। শুধু সেট পরীক্ষায় নয়, প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের টেট ও কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের সিটিইটি পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সে। সেট পরীক্ষার নূন্যতম উত্তীর্ণের মান রেখেও তাঁর প্রাপ্ত নম্বর অনেক বেশি। তাই তাঁর অধ্যাপক হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা থাকবে না বলেই আশা কার্তিকের।

কার্তিকরা তিন ভাই বোন। পরিবারের মেজো ছেলে কার্তিক। দিদি প্রতিমা শবর উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর বিয়ে হয়ে যায় তাঁর। ছোটো বোন শ্রীমতী শবর বাংলায় এম.এ পড়ছেন ঝাড়গ্রামের সাধু রামচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইতিমধ্যে লোধা শবর পরিবারের সন্তান কার্ত্তিকের সাফল্যে উৎফুল্ল তাঁর কলেজ সেবাভারতী মহাবিদ্যালয় তাঁকে সংবর্ধনা দিয়েছে।

এতকিছুর পরও দারিদ্রতার কাছে হার মানতে রাজি নয় কার্তিক। মা, বাবা, শিক্ষকদের পাশে পেয়েছে সে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তার প্রতিভা। তাঁর এই সাফল্যে শুধু ঝাড়গ্রাম নয়, বাংলা তথা দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে কার্তিক।