চাল রফতানি বন্ধে বিপাকে চাষি থেকে ব্যবসায়ীরা

ইন্ডিয়ান রাইস এক্সপোর্টার ফেডারেশনের দাবি, চাল রফতানির ক্ষেত্রে তারা নানা সমস্যায় পড়ছে। তাদের দাবি, রফতানি কমে যাওয়ায় ভারতের জাতীয় অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।

চাল রফতানি বন্ধে বিপাকে চাষি থেকে ব্যবসায়ীরা
(ফাইল চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রফতানিকারক দেশ আমাদের ভারত। বিশ্বের মোট চালের চাহিদার ৪০ ভাগই রফতানি হয় ভারত থেকে। অতি প্রয়োজনীয় এই খাদ্যপণ্য রফতানিতে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত। এর জেরে বিশ্বব্যাপী খাদ্যসংকট দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে বিভিন্ন মহলে। 

 সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার নন বাসমতি সিদ্ধ চালের উপর ২০ শতাংশ রফতানি কর ধার্য্য করেছে। এমনকি চাল রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এর ফলে প্রায় ৮০ শতাংশ চাল রফতানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে চাল রফতানিকারক সংস্থাগুলি। আর এই উপলক্ষে ইন্ডিয়ান রাইস এক্সপোর্টার ফেডারেশনের উদ্যোগে কলকাতায় চাল রফতানিকারক সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে এক আলোচনা সভায় আয়োজন করা হয়। এই আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি এই সুগন্ধী চাল বিদেশে রফতানির ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। রাজ্য সম্পাদক সুনীল আগরওয়াল জানান, বাসমতি চালের ন্যূনতম রফতানি মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় একদিকে যেমন তাদের বিক্রি অনেকটা কমেছে, পরোক্ষভাবে রাইস মিলগুলিতে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা। নন বাসমতি সেদ্ধ চালের উপর কর বেড়ে যাওয়ায় রাজ্যের চাষিরাও ন্যূনতম বিক্রয় মূল্যে চাল বিক্রি করতে ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

ইন্ডিয়ান রাইস এক্সপোর্টার ফেডারেশনের দাবি, চাল রফতানির ক্ষেত্রে তারা নানা সমস্যায় পড়ছে। তাদের দাবি, রফতানি কমে যাওয়ায় ভারতের জাতীয় অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে। এছাড়াও প্রাকৃতিক দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় অস্বাভাবিক আবহাওয়া চলছে। ভারতে বেশি বৃষ্টিতে বিপন্ন চাষবাস। পাকিস্তানের বন্যাও বিঘ্ন ঘটিয়েছে চাল সরবরাহে। এছাড়া এল নিনো-সহ অস্বাভাবিক সব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে শস্যের উৎপাদনে সমস্যা দেখা দিতে পারে।  যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে ভারত সহ বিশ্ব বাজারে চাল রফতানির উপর।

চাল আমদানিকারক দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে চিন, ফিলিপাইন, নাইজেরিয়া। অভ্যন্তরীণ বাজারে ঘাটতি দেখা দিলে চাল আমদানি করে ইন্দোনেশিয়া এবং বাংলাদেশও। অতি সম্প্রতি আফ্রিকা মহাদেশেও চালের চাহিদা বাড়ছে। কিউবা এবং পানামাতেও চালের চাহিদা রয়েছে। বিশ্বব্যাপী আমদানি-রফতানি হয় মূলত চার জাতের চাল। এর মধ্যে সরু লম্বা দানার কম দামের ইন্ডিকা চালই সবচেয়ে বেশি বেচা-কেনা হয়। গত বছর ভারত ১৪০টি দেশে মোট ২২ মিলিয়ন টন চাল রফতানি করেছে। যার মধ্যে ৬ মিলিয়ন টনই ছিল তুলনামূলক ওই কম দামি ইন্ডিকা গোত্রের চাল। ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী যত চাল আমদানি-রফতানি হয়েছে তার ৭০ শতাংশই ছিল ইন্ডিকা! এদিকে ভারত সেই চাল রফতানিই সম্প্রতি বন্ধ করে দিয়েছে। আর এর বড় রকমের প্রভাব পড়বে বিশ্বে।