ঠিকানা ভুলের জের! ৬ বছর ধরে শ্রীঘরে তিন বাংলাদেশী

২০১৭ সালের ২৯ মার্চ কাজের সন্ধানে ভারতে পাড়ি দিয়েছিলেন বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার বালুবাসা গ্রামের বাসিন্দা নুর আলম ও তাঁর দুই বন্ধু কক্সবাজারের ঝিমংখালির বাসিন্দা আবদুল মুনাফ ও মহম্মদ রিদওয়ান। জানুন বিস্তারিত...

ঠিকানা ভুলের জের! ৬ বছর ধরে শ্রীঘরে তিন বাংলাদেশী
(ফাইল চিত্র)

রিমিক মাঝি, কলকাতা: পুলিশ ভুল করে বাংলাদেশের বদলে মায়ানমারের ঠিকানা লিখেছিল। পুলিশের এই মারাত্মক ভুলেই সাত বছর ধরে ভারতের জেলে বন্দি বাংলাদেশের কক্সবাজারের তিন অনুপ্রবেশকারী। অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে কাটতে চলেছে তাঁদের বন্দি দশা। অবিলম্বে তিন বাংলাদেশি বন্দিকে দেশে ফেরত পাঠাতে কেন্দ্র ও রাজ্যকে নির্দেশ হাইকোর্টের।

২০১৭ সালের ২৯ মার্চ কাজের সন্ধানে ভারতে পাড়ি দিয়েছিলেন বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার বালুবাসা গ্রামের বাসিন্দা নুর আলম ও তাঁর দুই বন্ধু কক্সবাজারের ঝিমংখালির বাসিন্দা আবদুল মুনাফ ও মহম্মদ রিদওয়ান। অভাবের সংসার। তাই কাজের সন্ধানে এবং বাড়তি উপার্জনের আশায় ভারতে আসতে মনস্থির করেন তিনজনে। টানাটানির সংসারে পাসপোর্ট করানোর মতো আর্থিক ক্ষমতা ছিল না তাঁদের। কিন্তু ২৯ মার্চ গভীর রাতে স্বরূপনগর থানার কৈজুরী সীমান্ত দিয়ে বেআইনি অনুপ্রবেশের সময় বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে যান তিনজনেই। পরের দিন তাঁদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেয় বিএসএফ।

ওইদিন বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে ওই তিন বাংলাদেশির সঙ্গে একইসঙ্গে ধরা পড়ে মায়ানমারেরও বেশকিছু বাসিন্দা। কিন্তু ওই তিন বাংলাদেশির বাড়ির ঠিকানা বসিরহাট আদালতে পুলিশ ভুল করে বাংলাদেশের বদলে মায়ানমারে দেখায়। ওই বছর পুলিশের দেওয়া চার্জশিটেও পুলিশের তরফে একই দাবি করা হয়। ফলে মামলার কেস ডায়েরি এবং আদালতে পুলিশের জমা দেওয়ার ভুল তথ্যের কারণেই গত ৭ বছরেও বেশি সময় ধরে দমদম সেন্ট্রাল জেলেই বন্দিজীবন কাটাচ্ছিলেন নুর আলম, আব্দুল মুনাফ এবং মহম্মদ রিদওয়ান। 

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Kolkata-police-lodge-a-complain-against-a-lower-court-lawyer-at-hc

অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে তিনজনের বন্দিদশা কাটতে চলেছে। অবিলম্বে এই তিন বন্দিকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে উদ্যোগী হয়ে, ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ বৃহস্পতিবার দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। পুলিশের ভুলে তাঁদের ৭ বছর জেলে থাকতে হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধেও যথাযথ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ওই তিন বাংলাদেশি বন্দি।

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Woman-Allegedly-lodge-a-complain-to-HC-against-her-Husband

এদিন আদালতে কেন্দ্র দাবি করেছে, বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে মায়ানমারে ওই তিনজনের বাড়ির ঠিকানার খোঁজ করা হয়েছিল। কিন্তু কিছুই পাওয়া যায়নি। যদি মায়ানমারের জায়গায় তাঁদের বাংলাদেশের সঠিক ঠিকানা লেখা থাকতো, তাহলে আইন মেনে ৯৫ দিনের মাথাতেই তাঁদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হতো। কিন্তু ভুল ঠিকানা লেখা থাকায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যের পক্ষ থেকেও পুলিশের ভুলের কারণে ওই তিনজনকে ৭ বছর জেলে থাকতে হয়েছে বলে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, রাজ্য আদালতকে আশ্বস্ত করেছে, তাঁদের দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে রাজ্য সদর্থক ভূমিকা নেবে।