শোনা হবে না কোনও অজুহাত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে কড়া নির্দেশ আদালতের
নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তি প্রসাদ সিনহাদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে বিচার প্রক্রিয়ার অনুমোদনের জন্য মুখ্যসচিবকে তাঁর বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

রিমিক মাঝি, কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে জেল হেফাজতে থাকা সরকারি আধিকারিক সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তি প্রসাদ সিনহাদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে বিচার প্রক্রিয়া (ট্রায়াল) শুরু করার অনুমতি দেওয়া নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে তাঁর মতামত জানাতে আরও তিন সপ্তাহ সময় দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। এর পর আর কোনও অজুহাত শোনা হবে না। এর পর যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। জানিয়ে দিল ডিভিশন বেঞ্চ। তবে জামিনের আবেদনের শুনানি হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তি প্রসাদ সিনহাদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে বিচার প্রক্রিয়ার অনুমোদনের জন্য মুখ্যসচিবকে তাঁর বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, মুখ্যসচিব তখন আদালতকে জানিয়ে ছিলেন, লোকসভা নির্বাচন নিয়ে তিনি ব্যস্ত রয়েছেন। তাই লোকসভা নির্বাচনের পর তিনি এর উত্তর দেবেন। কিন্তু এখনও মুখ্যসচিব এই নিয়ে তাঁর মতামত আদালতকে না জানানোয় বুধবার শুনানিতে যথেষ্ট বিরক্ত প্রকাশ করে।
এরপরই বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এই শেষবারের মতো মুখ্যসচিবকে তাঁর বক্তব্য জানানোর জন্য তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে মুখ্যসচিবকে অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমতি দেওয়া নিয়ে মতামত জানাতে হবে আদালতকে। তিনি বলেন, '৭ মে উত্তর চাওয়া হয়েছিল। এখন জুলাই মাস। এখনও উত্তর মেলেনি। আমরা দ্রুত উত্তর চাই মুখ্যসচিবের কাছথেকে। এর পর আর কোনও অজুহাত শোনা হবে না। এর পর যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে আদালতের পক্ষ থেকে।'
আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Flooded-North-Bengal-For-Heavy-Rain-Fall#google_vignette
পাশাপাশি এদিন বিচার প্রক্রিয়ার অনুমোদনের জন্য এই অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিক সহ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদনের শুনানি কেন থমকে থাকবে? সেই প্রশ্নও তোলে ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, এর জন্য জামিনের আবেদনের শুনানি স্থগিত রাখার প্রয়োজন নেই। আইনজীবীরা চাইলে জামিন মামলা শুরু হতে পারে। মুখ্যসচিবের অনুমোদনের জন্য জামিন মামলা আটকে থাকবে না। সিবিআইকে-ই এর জন্য প্রস্তুত হতে নির্দেশ দিল আদালত।
বুধবারের শুনানির সময়ে সিবিআই-এর আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী বলেন, রাজ্যপাল ইতিমধ্যেই অনুমোদন দিয়েছেন। মুখ্য সচিবের উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। মামালকারীদের আইনজীবী সওয়াল করেন, জামিন মামলায় অনুমোদন দরকার বলে সিবিআই সময় নষ্ট করছে। তারজন্য এক বছরেরও বেশি সময় ধরে জেলে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন অভিযুক্তরা। তারপরই বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ১২ জুলাই থেকে রোজ জামিনের মামলার শুনানি হবে।
আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Hearing-of-defamation-case-against-cm-Mamata-Banerjee-on-tomorrow
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমতি আগেই দিয়েছেন রাজ্যপাল। কিন্তু অভিযুক্ত বাকি সরকারি আধিকারিকদের ট্রায়াল শুরু করার ক্ষেত্রে এখনও অনুমতি দিচ্ছেন না মুখ্যসচিব।