Panchayat Election 2023: ১০ বছরেও গ্রামে তৈরি হয়নি রাস্তা! TMC ছেঁড়ে BJP-তে যোগ দিলেন শতাধিক কর্মী সমর্থক

সদ্য গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া প্রাক্তন ওই TMC কর্মী সমর্থকদের অভিযোগ, স্থানীয় ও ৭৩ নম্বর বুথের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য অসীম বালা বিগত ১০ বছরেও নাকি তাঁদের জন্য ভালো রাস্তা করে দেননি।

Panchayat Election 2023: ১০ বছরেও গ্রামে তৈরি হয়নি রাস্তা! TMC ছেঁড়ে  BJP-তে যোগ দিলেন শতাধিক কর্মী সমর্থক
বিজেপির দলীয় পতাকা হাতে সদ্য যোগদানকারীরা (নিজস্ব চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই চরমে উঠছে শাসক-বিরোধীরা তরজা। ভোট আসতেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে উঠে আসছে পানীয় জল, রাস্তা, বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষিপ্ত অভিযোগের ঘটনা। এমনকি শাসক শিবিরে থেকে কাজ করতে না পারার মতন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। ভোটের মুখে শাসক শিবিরে ভাঙন নিয়ে জেলায় জেলায় চলছে তরজা। তারই মধ্যে ফের রাজ্যের শাসক শিবিরে ভাঙন ধরাল BJP। নদিয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে পদ্মফুলে নাম লেখালেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সহ শতাধিক কর্মী সমর্থক।  

 নদিয়া জেলার শান্তিপুর হরিপুর পঞ্চায়েত এলাকার গৌরহরিপাড়ার পঞ্চায়েত সদস্য সহ শতাধিক কর্মী সমর্থক এদিন তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে নাম লেখান বিজেপিতে। জানা গিয়েছে, দলবদলুরা ওই এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বলেই পরিচিত। বুধবার রাতে শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে দল ছাড়েন তাঁরা। সদ্য গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া প্রাক্তন ওই TMC কর্মী সমর্থকদের অভিযোগ, স্থানীয় ও ৭৩ নম্বর বুথের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য অসীম বালা বিগত ১০ বছরেও নাকি তাঁদের জন্য ভালো রাস্তা করে দেননি। রাজ্য সরকারের প্রতি বিভিন্ন অভিযোগ থাকলেও মূলত মেম্বারের প্রতি ক্ষোভেই নাকি তাঁদের এই দলত্যাগ। তবে, ডান বাম নয় সরাসরি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাঁরা।  

সূত্রের খবর, স্থানীয় বিজেপি বুথ কর্মকর্তা সুধীর দাসের বাড়ি থেকেই বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন যোগদানকারীরা। কারন তাঁরা, নিজেরাই দীর্ঘক্ষণ প্রতীক্ষায় ছিলেন নেতৃত্বের হাত থেকে পতাকা নেওয়ার। শহর বিধানসভা এবং জেলা নেতৃত্ব অমিত বৈরাগী, সুব্রত কর, ডঃ সোমনাথ করেরা ব্যস্ত ছিলেন ব্লকেরই অন্য একটি পঞ্চায়েত এলাকার মিটিংয়ে। মাঝে এক পশলা বৃষ্টি লোডশেডিং এ সবই উপেক্ষা করে তারা প্রতীক্ষায় অনড়। 
অবশেষে রাত ন'টায় এসে পৌঁছন নেতৃত্ব। তাঁদের আগ্রহের কাছে বিফলে যায় দিনের আলোয় পরের দিন যোগদান করানোর ইচ্ছা। যোগদানের শর্ত একটাই পরের দিন সকালে নেতৃত্বকে দেখে আসতে হবে রাস্তার চেহারা। যোগদান করে যোগদানকারীরা জানান, কেন্দ্র সরকার আবাস যোজনার অর্থ, বিভিন্ন ধরনের ভাতা, ভ্যাকসিন, সরকারি রেশন, বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প কখনও জাতি দেখে দেন না। অথচ এ রাজ্যে বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক বলে এবং কখনও কখনও এনআরসির ভয় দেখিয়ে সংখ্যালঘু ভোট ব্যাংঙ্ক সুরক্ষিত করে নির্বাচনী বৈতরণী পার করে তৃণমূল। অথচ তারা হিন্দু মুসলমান পাশাপাশি সুসম্পর্কে বসবাস করছেন দীর্ঘদিন নির্বিবাদে। তাই এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে, কেন্দ্রীয় সরকারকে আরও মজবুত করতে, প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের দেশ গড়তে, দুর্নীতি এবং স্বজন পোষণমুক্ত পঞ্চায়েত গড়তে তাদের এই সিদ্ধান্ত।

এই বিষয়ে সুব্রত কর বলেন, ''জয় শ্রীরাম হিন্দু ধর্মের আবেগ হতে পারে। তবে তা বিজেপির স্লোগান কখনই নয়। বিজেপির স্লোগান হল বন্দেমাতরম, ভারত মাতার জয়ধ্বনি। কেউ যদি আল্লাহু আকবর বলে ভারত মাতার জয় বলতে পারে সে প্রকৃতপক্ষেই এ দেশের সন্তান। নিজ নিজ ধর্ম পালনে, বিজেপি কখনও বাধা দেয় না। বরং তৃণমূল তাদের কাছে গিয়ে বিজেপিকে সাম্প্রদায়িকের তকমা লাগিয়ে নানান ভাবে ভুল বুঝিয়ে থাকেন। তবে সংখ্যালঘু ভাই-বোনেরা এখন বুঝতে পারছেন। বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চা রয়েছে রাজ্য জেলা ব্লক স্তরে। যেখানে জৈন খ্রিস্টান মুসলমান সব ধর্মের মানুষজন স্বসন্মানে বিজেপি করে।''

শুধু তাই নয়, এদিনের যোগদান প্রসঙ্গে, প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য তথা বর্তমান তৃণমূল প্রার্থী অসীম বালা বলেন, ''তিনি সংবাদ মাধ্যমের কাছেই প্রথম শুনলেন, তবে শতাধিক সংখ্যালঘু পরিবার ওই এলাকায় বাস করেন না। সমস্ত উন্নয়ন একসঙ্গে করা সম্ভব হয় না তবে ধীরে ধীরে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প এবং উন্নয়ন পৌঁছেছে গ্রামে দুই একটি রাস্তা বাকি থাকলে তার জন্য অন্য দলে যোগদান বোকামি ছাড়া আর কিছু না। তবে যদি যোগদান করে থাকে তারা কেউই তৃণমূল কর্মী সমর্থক নয়।''