সরকারের কাছে বকেয়া কোটি টাকা, ভোটের মুখে পেট্রোল সরবরাহ বন্ধের হুঁশিয়ারি ডিলারদের

সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সরকারি দফতরগুলিও পেট্রোলের উপর নির্ভরশীল। আর সেই পেট্রোল পাম্প যদি বন্ধ হয়ে যায় তবে চরম সংকটে পড়তে পারে গোটা রাজ্য।

সরকারের কাছে বকেয়া কোটি টাকা, ভোটের মুখে পেট্রোল সরবরাহ বন্ধের হুঁশিয়ারি ডিলারদের
(ফাইল চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: বিধানসভা ও গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনের এখনও বকেয়া লক্ষ লক্ষ টাকা। বকেয়া টাকা না মেটালে এবং অগ্রীম ৭৫ শতাংশ টাকা না দিলে লোকসভা নির্বাচনে তেল দেওয়া অসম্ভব বলে জানালো পেট্রোলিয়াম ডিলার্স সংগঠন। এমন বক্তব্যের জেরে কপালে চিন্তার ভাঁজ সাধারণের। 

সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সরকারি দফতরগুলিও পেট্রোলের উপর নির্ভরশীল। আর সেই পেট্রোল পাম্প যদি বন্ধ হয়ে যায় তবে চরম সংকটে পড়তে পারে গোটা রাজ্য। অভিযোগ, নির্বাচন আসে আর যায়। প্রশাসনের নির্দেশে ইচ্ছেমতো জ্বালানি তেল ভরে ছোটাছুটি করে প্রশাসনের গাড়িগুলি। নির্বাচন মিটলেই জ্বালানি তেলের সেই দাম পড়ে থাকে বকেয়াই৷ একের পর এক নির্বাচনে এভাবেই বাড়তে থাকে বকেয়ার পরিমাণ। এবার লোকসভা নির্বাচনের মুখে বেঁকে বসল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন। বকেয়া টাকার সম্পূর্ণ অংশ ও সামনের নির্বাচনের জন্য অগ্রিম ৭৫ শতাংশ টাকা না দিলে এবার তেল সরবরাহ অসম্ভব বলে জানিয়ে দিল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন। 

আরও পড়ুন: https://www.tribetv.in/WB-CM-Mamata-Banerjee-targets-centre-government-over-caa-and-nrc-issue

নির্বাচনের সময় প্রচুর পরিমাণে গাড়ি ব্যবহার করতে হয় প্রশাসনকে। ভোটের দিন ভোটকর্মীদের বুথে পৌঁছনো ও ভোট শেষে ফিরিয়ে আনার জন্য অসংখ্য গাড়ির প্রয়োজন হয়। এছাড়াও নির্বাচন ঘোষণা থেকে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত নজরদারি ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার কাজে সরকারি কর্মী আধিকারিকদের অহরহ ব্যবহার করতে হয় গাড়ি। এই গাড়িগুলিতে জ্বালানি তেল ভরার জন্য কমবেশি প্রতিটি ব্লকেই একটি বা একাধিক পেট্রোল পাম্প নির্দিষ্ট করা হয় প্রশাসনের তরফে।

আরও পড়ুন: https://www.tribetv.in/112-company-CRPF-will-be-deployed-in-CoochBehar

নির্বাচন মিটলে নির্বাচনের বরাদ্দ অর্থ থেকে সেই জ্বালানি তেলের দাম মেটানোর কথা ব্লক প্রশাসনের। কিন্তু ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচন এবং ২০২২ এর গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনের ক্ষেত্রে সেই টাকা মেটানো হয়নি পেট্রোল পাম্পগুলিকে। ফলে নির্দিষ্ট ওই পেট্রোলপাম্পগুলিতে বকেয়া পড়ে রয়েছে বিপুল অঙ্কের টাকা। প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরে এবং রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে বারংবার আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি। এবার তাই লোকসভা নির্বাচনের মুখে বকেয়া আদায়ের লক্ষে বড়সড় ঘোষণা করল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন। বাঁকুড়ার একটি বেসরকারি হোটেলে বৈঠক করে পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে দ্রুত বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার দাবি তোলা হয়। সংগঠনের দাবি, বকেয়া টাকা মেটানোর পর এই নির্বাচনের জন্য ৭৫ শতাংশ টাকা অগ্রিম হিসাবে দিতে হবে প্রশাসনকে। তবেই নির্বাচনে মিলবে জ্বালানি তেল। প্রশাসন জবরদস্তি করলে রাজ্য জুড়ে ধর্মঘটে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছে পেট্রোল পাম্প মালিকদের  সংগঠন।  

তবে এমন মন্তব্যের জেরে সাধারণ মানুষদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। এমন ঘটনায় যদি পেট্রোল পাম্প বন্ধ হয়ে যায় তবে সাধারণ মানুষদের কর্মজীবনের পাশাপাশি সরকারি দফতরগুলি চরম সংকটে পড়বে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তাঁরা। তবে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে অর্থাৎ পেট্রোল পাম্প যাতে বন্ধ না হয়, তার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষও। এখন দেখার কবে এই সমস্যার সমাধান হয়।