Behala News: আর যাওয়া হবে না বাবার হাত ধরে স্কুলে! লরির ধাক্কায় মর্মান্তিক পরিণতি খুদে সৌরনীলের

উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে নামানো হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকল বাহিনীও। পুলিশের তরফে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়...

Behala News:  আর যাওয়া হবে না বাবার হাত ধরে স্কুলে! লরির ধাক্কায় মর্মান্তিক পরিণতি  খুদে সৌরনীলের
নিহত পড়ুয়া সৌরনীল সরকার (বাঁ দিকে) বাসে ভাঙচুর ক্ষুদ্ধ জনতার (নিজস্ব চিত্র )

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: সাত সকালে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা শহর কলকাতায়। বাবার সঙ্গে স্কুলে যাওয়ার পথে বেপরোয়া গতির বলি হতে হল ৭ বছরের ছোট্ট পড়ুয়াকে। শুক্রবার সকালে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বেহালা চৌরাস্তার মোড়ে। নিহত ছাত্রের নাম সৌরনীল সরকার (৭)। বাড়ি বেহালায়। দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম সৌরনীলের বাবাও। আশঙ্কাজনক অবস্থায় SSKM-এর ট্রমা কেয়ারের চিকিৎসাধীন তিনি। গোটা ঘটনায় কার্যত সকাল সাড়ে ৬'টা থেকে রণক্ষেত্র বেহালা। ঘটনার প্রতিবাদে পুলিশ জনতা খণ্ডযুদ্ধে উত্তপ্ত এলাকা। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। 

সূত্রের খবর, শুক্রবার সকাল সাড়ে ছ'টা নাগাদ বাবার হাত ধরে স্কুলে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল সৌরনীল। সে স্থানীয় বড়িশা হাইস্কুলের প্রাথমিক বিভাগের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। এদিন সকালবেলা বেহালা মেট্রো স্টেশনের সামনেই ঘটে দুর্ঘটনাটি। সেই সময় মাটিবোঝাই একটি লরি প্রচণ্ড গতিতে এসে ধাক্কা মারে বড়িশা হাইস্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির এক পড়ুয়া এবং তার বাবাকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই খুদে পড়ুয়ার। দুর্ঘটনার পরই ক্ষোভ আছড়ে পড়ে ডায়মন্ড হারবার রোডে। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। পুলিশ এবং আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে বেহালা চৌরাস্তা সংলগ্ন রাস্তা। রাস্তায় আটকে প্রচুর যানবাহন। চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। 

জানা গিয়েছে, উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে নামানো হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকল বাহিনীও। পুলিশের তরফে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। উন্মত্ত জনতার ছোড়া পাথরে আহত হয়েছেন কয়েক জন পুলিশকর্মী। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন স্থানীয়ও। স্থানীয় এক মহিলার মুখে কাঁদানে গ্যাসের সেল এসে লাগায় গভীর ক্ষত হয়েছে বলে অভিযোগ। যা ক্ষোভের আগুনে আরও ঘি ঢেলেছে। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ''পুলিশ নিজের কাজ করে না। ঘুষ খেতে ব্যস্ত। পুলিশ সচেষ্ট হলে কখনও এমন ঘটনা ঘটতে পারে?''

গোটা ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ওই এলাকায়। শোকের ছায়া সৌরনীলের স্কুলেও। মর্মান্তিক এই ঘটনায় পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান ক্ষুদ্ধ অভিভাবকরাও। রাস্তার উপর স্কুল। ঠিকমত কোনও ট্রাফিক সার্জেন থাকে না নিরাপত্তার দায়িত্বে। অভিযোগ, ট্রাফিক পুলিশ যে দু-একজন আছেন তাঁরাও দূরে বসে মোবাইল টিপতে ব্যস্ত। রাস্তায় কী হচ্ছে কোনও হেলদোল নেই তাঁদের। পুলিশের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। 

এদিকে বেহালার চৌরাস্তার কাছে বেশ কয়েকটি স্কুল রয়েছে। তাই সকাল থেকেই ওই রাস্তায় পড়়ুয়া এবং অভিভাবকদের ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু পুলিশ যান নিয়ন্ত্রণের বদলে বড় বড় ট্রাক-লরির থেকে টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয় বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। আর আজকের ঘটনা তা যেন আরও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল পুলিশের 'ঠুঁটো জগন্নাথের' ভূমিকা!