লাইভ স্ট্রিম ইস্যুতে ভেস্তে গেল বৈঠক, বেনজির সংঘাতে সরকার-আন্দোলনকারীরা

৫ দফা দাবিতে অনড় আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বিনা শর্তে খোলা মনে আলোচনায় বসার ডাক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরও জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন পড়ুন...

লাইভ স্ট্রিম ইস্যুতে ভেস্তে গেল বৈঠক, বেনজির সংঘাতে সরকার-আন্দোলনকারীরা

ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরুক, তা নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের চেষ্টার অন্ত ছিল না। বার বার জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা।  কিন্তু সুরাহা মেলেনি। নবান্নের তরফে বার বার আলোচনার টেবিলে ডেকেও লাভ হয়নি। জুনিয়র ডাক্তারদের এই অনড় মনোভাবে এবার কার্যত হতাশা প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

৫ দফা দাবিতে অনড় আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বিনা শর্তে খোলা মনে আলোচনায় বসার ডাক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার, স্বাস্থ্য সচিবের বৈঠকে বসার আমন্ত্রণ প্রত্যাখান করেছিলেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। তাঁদের দাবি ছিল ১০ বা ১৫ নয় ৩০ জন প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনাইয় বসতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। বৃহস্পতিবার সকালে মুখ্য সচিব আন্দোলনকারীদের বিকাল ৪টে ৪৫ মিনিটে নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানান। প্রথমেই প্রতিনিধি দলের সংখ্যায় নিজেদের পুরোনো অবস্থানে অনড় থাকলেও ডাক্তার দের দাবি মেনে ৩০ জনের প্রতিনিধিকে নবান্ন সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের দাবি মেনে নেয় নবান্ন। এমনকি লাইভ স্ট্রিমিংয়ের পরিবর্তে গোটা আলোচনার ভিডিও রেকর্ডইং করার প্রস্তাবও দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, ডিজির পক্ষ থেকে।

সভা শেষে তা আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়। কিন্তু গোটা আলোচনার লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবিতে অনড় থেকে নবান্নে পৌঁছেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় যোগ দিলেন না জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধি দল। ফলে ভেস্তে গেল বৈঠক। অধরা রইল সামাধান সূত্র। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরুক, তা নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের চেষ্টার অন্ত ছিল না। বার বার জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা। কিন্তু সুরাহা মেলেনি। নবান্নের তরফে বার বার আলোচনার টেবিলে ডেকেও লাভ হয়নি। নিজেদের দাবিতেই অনড় রইলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা।

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/WB-CM-Mamata-Banerjee-says-that-she-was-to-ready-for-resign-from-chief-minister-post

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সরাসরি লাইভ স্ট্রিমিং করতে না দেওয়ায় রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন না আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের ৩০ জনেরও বেশি প্রতিনিধিদল। বৃহস্পতিবার নবান্নের সভাঘরে দু'ঘণ্টা ১০ মিনিট অপেক্ষা করার পর চিকিৎসকরা না আসায় নবান্ন ছাড়েন মুখ্যমন্ত্রী। তবে কেন লাইভ স্ট্রিমিংয়ে আপত্তি? সন্ধেবেলা নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তার যুক্তি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। বললেন, 'এটা বিচারাধীন বিষয়। সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। শীর্ষ আদালত যেভাবে লাইভ স্ট্রিমিং করতে পারে, আমরা পারি না। এবিষয়ে সুপ্রিম কোর্টেরই নির্দিষ্ট নিয়ম আছে।' অবশ্য ভিডিও রেকর্ডিংয়ের কথা জানিয়েছিল নবান্ন। কিন্তু আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবিতে অনর রইলেন।  

 আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা বৈঠকে যোগ না দেওয়ার পিছনে বাইরে থেকে উস্কানির অভিযোগও তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, চিকিৎসকরা আদৌ তিলোত্তমার সুবিচার চান কিনা সেনিয়েও প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। উদাহরণ হিসাবে নিজের সিঙ্গুর আন্দোলনের কথাও টেনে আনলেন মুখ্যমন্ত্রী। সমাধানধান সূত্র না বেরানোয় হতাশ মুখ্যমন্ত্রী। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের ছোটো ভাইবোন বলে ক্ষমা করে দিয়ে তাঁদের অবিলম্বে খোলা মনে আলোচনার তেবিলে বসার এবং কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বানও জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে চিকিৎসকদের করমবিরতির কারণে চিকিতসা না পেয়ে সাধারন মানুসের অসহায় অবস্থার কথাও তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে যে এসমার মতো কঠোর আইন লাগু করা হবে না, তাও জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।  

সমাধানসূত্র না বেরানোয় রাজ্যবাসীর কাছে করজোরে ক্ষমাও চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যবাসীর স্বার্থে প্রয়োজনে তিনি পদ ছাড়তে এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকেও পদত্যাগ করতে রাজি আছেন বলে জানান। পদ নয়, নির্যাতিতার প্রতি সুবিচার এবং রাজ্যবাসীর চিকিতসাই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।  

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Junior-doctors-stay-on-their-demand-for-live-streaming-meeting-with-cm-mamata-banerjee

বৈঠক না হওয়ায় নবান্নের সামনে বসে পড়েন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানান সুরাহা না মেলা পর্যন্ত আন্দোলন জারি থাকবে। যদিও প্রশাসনের তরফে আশানুরূপ সদ্দুত্তর না মেলায় শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নাস্থলে ফিরে যান আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা। তবে বৈঠক না হওয়ার জন্য পাল্টা রাজ্য প্রশাসনের ঘারেই দায় চাপালেন তাঁরা। স্বাস্থ্য ভবন থেকে নবান্নের উদ্দেশে বাসে ওঠার আগে লাইভ স্ট্রিমিং না করার সিদ্ধান্তে অনর থাকার কথা একবারও তাঁদের জানানো হয়নি বলে দাবি করলেন চিকিৎসকরা। 'ওঁরা বিচার চায় না, চেয়ার চায়' -মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যে হতাশা প্রকাশ করেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। তাঁদের দাবি নবান্ন এবং মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের প্রতি এখনও তাঁদের ভরসা আছে বলেই তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে এসেছিলেন। এই আন্দোলন শুধু এখন শুধু আর চিকিৎসকদের নয় সমস্ত শাধারণ মানুষের। তাই বৈঠকে  দুপক্ষের মধ্যে কি আলোচনা হচ্ছে তাঁর সচ্ছতা বজায় রাখতে তাঁরা লাইভ স্ট্রিমিংয়ের সিদ্ধান্তে অনড় বলেই জানান আন্দোলনকারীরা।      

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Opposition-vs-BJP-After-PM-Visits-Chief-Justice-Home-For-Ganesh-Puja

 ৩২ দিনের শর্ত পাল্টা শর্তে লাগাতার আন্দোলনেও বেরলো না সমাধান সূত্র। নিজেদের দাবিতে অনড় রইল দুই পক্ষই। ফলে ভেস্তে গেল বৈঠক। কোন পথে হবে এই জটিলাবস্থার সমাধান! উত্তর অজানা। সময়ের অপেক্ষা ছাড়া অন্য কোনও পথ দেখছেন না কেউ।