৯৬ ঘণ্টা পার, অনশন অব্যাহত কলকাতা মেডিকেল কলেজ পড়ুয়াদের

সোমবার কলকাতা মেডিকেল পড়ুয়াদের অনশন গড়াল ৪ দিনে। অনশন চলাকালীন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এক কলেজ পড়ুয়া।

৯৬ ঘণ্টা পার, অনশন অব্যাহত কলকাতা মেডিকেল কলেজ পড়ুয়াদের

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল:  ছাত্র ভোট নিয়ে উত্তাল কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ঘেরাও অবস্থান, দফায় দফায় বৈঠকেও কাটছে না জট। জল গড়িয়েছে অনশনে। সোমবার কলকাতা মেডিকেল পড়ুয়াদের অনশন গড়াল ৪ দিনে। অনশন চলাকালীন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এক কলেজ পড়ুয়া। তাঁর নাম ঋতম মুখোপাধ্যায়। অসুস্থ বোধ করায় হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয় ঋতমকে। রক্তচাপ কমে যাওয়ার কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।  

সূত্রের খবর, কেটে গিয়েছে, অনশনের ৯৬ ঘণ্টা। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে শুক্রবার থেকে অনশন চলছে কলকাতা মেডিকেল কলেজের পড়ুয়াদের। অনশন প্রত্যাহারের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের কাছে আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি। তাদের স্পষ্ট দাবি, ছাত্র সংসদের নির্বাচন ২২ ডিসেম্বরে করতে হবে। এমন অবস্থায় তাদের আন্দোলনে বাইরের মদত রয়েছে বলে মনে করছে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। আন্দোলনরত পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াতে আজ কনভেনশনের ডাক দিয়েছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

 কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেই এই কনভেনশন হবে। আন্দোলকারী পড়ুয়ারাও আগামীকাল নাগরিক মিছিলের ডাক দিয়েছ়েন। অন্যদিকে, কলকাতা মেডিক্যালে জট কাটাতে আগামীকাল স্বাস্থ্য ভবনে বৈঠক হবে। বৈঠকে থাকবেন স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম, স্বাস্থ্য দফতরের অন্য আধিকারিকরা, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, সুপার, ডিন এবং আন্দোলনরত পড়ুয়াদের চার প্রতিনিধি।

২২ ডিসেম্বর ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্ভব নয় বলে আরও একবার জানিয়ে দিয়েছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার নির্বাচন নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষের বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকে যদি কোনও সমাধান সূত্র বেরিয়ে না আসে তাহলে সে ক্ষেত্রে কোন পথে যাবে মেডিক্যালের পড়ুয়াদের আন্দোলন তা নিয়ে চিন্তিত কলেজ কর্তৃপক্ষ।

জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ছাত্রদের অনশনে ‘হোক কলরব’ পোস্টার পড়েছে। শনিবার বিকেলে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বিধায়ক চিকিৎসক ডা. নির্মল মাঝি। যদিও তিনি পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেননি। কলেজের অধ্যক্ষ ডা. ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানিয়েছেন, তিনি নিয়মিত অনশনরত পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাঁদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিচ্ছেন। তবে কোনওভাবেই পড়ুয়াদের অনশনে ওঠাতে পুলিশি সাহায্য নেওয়া হবে না সে বিষয়টিও জানিয়েছেন অধ্যক্ষ। 

ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে অনশনরত পড়ুয়ারা জানান, ৬ বছর ধরে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়নি। যে সংগঠনই নির্বাচনে জয়ী হোক না কেন পড়ুয়ারা চাইছেন নির্বাচন হোক। যদিও মেডিক্যাল কলেজের সুপার ডা. অঞ্জন অধিকারী স্পষ্ট জানিয়েছেন, ''স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশ পেলেই নির্বাচন হবে। এখানে আমাদের কোনও হাত নেই।''

এদিকে এই পরিস্থিতিতে এবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অনশনকারীদের পাশে দাঁড়াল আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। রবিবার অনশনরত পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি সহ অন্যান্যরা। বিক্ষোভকারীদের সহমর্মিতা দেখান তিনি।

এরপর মেডিক্যাল কলেজের বিক্ষোভকারীদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি ইরফান সাদিক জানান, ''শুধু কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ নয়‌। রাজ্যের কোন‌ও কলেজে নির্বাচিত ছাত্র সংসদ না থাকায় সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন পড়ুয়ারা।''