রাষ্ট্রপতিকে কুকথা, জেলায়-জেলায় অব্যাহত আদিবাসী সংগঠনের বিক্ষোভ

মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন তো কেউ আবার রাষ্ট্রপতির পা ধরে ক্ষমা চাওয়ার কোথাও বলেছেন। এসবের মাঝেই জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে আদিবাসীদের বিক্ষোভ। 

রাষ্ট্রপতিকে কুকথা,  জেলায়-জেলায় অব্যাহত আদিবাসী সংগঠনের বিক্ষোভ

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: 'রাষ্ট্রপতির পা ধরে ক্ষমা চাওয়া উচিত', সম্প্রতি রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্যকে ঘিরে এমনটাই জানান হয় বিরোধীর দলের পক্ষ থেকে। এতদিন কেটে যাওয়ার পরও কেন চুপ রয়েছে রাজ্যের শাসকদল, সেই ঘিরে বারবার প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যা ঘিরে উত্তাল রাজনীতি। ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় বিক্ষোভে নেমেছে গেরুয়া শিবির। কেউ মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন তো কেউ আবার রাষ্ট্রপতির পা ধরে ক্ষমা চাওয়ার কোথাও বলেছেন। এসবের মাঝেই জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে আদিবাসীদের বিক্ষোভ। 

রবিবার সকালে বাঁকুড়ায় আদিবাসীদের বিক্ষোভের মুখে রাজ্যের খাদ্য দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি। বাঁকুড়ার খাতড়া পাম্প মোড়ে আদিবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। তাঁর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। অখিল গিরিকে অবিলম্বে গ্রেফতারির দাবিতে মন্ত্রীর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ। ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দিলেন জ্যোৎস্না মান্ডি। জ্যোৎস্না মান্ডি বলেন, 'আমি একজন আদিবাসী মহিলা হয়ে, রাষ্ট্রপতিকে যেভাবে তিনি তীব্র আক্রমণ করেছেন এবং তার বডি ল্যাঙ্গোয়েজ যা ছিল, সেটার আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।'

এদিকে শুধু বাঁকুড়া নয়, কাথিঁতে অখিল গিরির বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে আদিবাসী সংগঠন। পাশাপাশি খাতরা থানায়, দিল্লিতে নর্থ অ্যাভিনিউ  থানায় গিয়েছেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। অখিল গিরির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। দিল্লিতে FIR হওয়ায় অখিলের-মন্তব্য দেশের রাজনীতিতে আলাদা মাত্রা পাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। এ দিন লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটা ওঁদের দলের সংস্কৃতি। রাজ্যের বিকাশ, উন্নয়নে ওদের কোনও উন্নতি হয়নি। ওদের উন্নতি হয়েছে মহিলাদের অপমান করার ক্ষেত্রে, বিশেষত আদিবাসী মহিলাদের অপমান করার ক্ষেত্রে। এটা সবাই জানে। আদিবাসীদের নিয়ে ওরা যে সামনে বড় বড় কথা বলে, আসলে ওদের চেহারাটা কেমন।” 

অন্যদিকে একই ইস্যুতে দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে বিক্ষোভ দেখায় আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান।  রবিবার বিকেলে বুনিয়াদপুর তিন মাথার মোড়ে পথ অবরোধ করে ও কুশপুতুল  পুড়িয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আদিবাসীরা। শতাধিক পুরুষ ও মহিলা প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ স্লোগান দেন। অখিল গিরির পদত্যাগের দাবি তুলে সোচ্চার হন। আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের পক্ষ থেকে বিভূতি টুডু জানান, রাষ্ট্রপতি অখিল গিরির কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যকে তাঁরা ধিক্কার জানাচ্ছেন। অখিল গিরির ওপর ক্ষুব্ধ জাতীয় মহিলা কমিশনও। এদিকে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন অখিল গিরি বলেন, 'আমি রাষ্ট্রপতিকে কোনও কটাক্ষ করিনি। আমি একটা উদাহরণস্বরূপ বলেছি। আমিও সংবিধানের লোক। শুভেন্দু অধিকারী তো বলেছেন আমাকে কাকের মতো দেখতে, হাফ মন্ত্রী ইত্যাদি।' তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। রাষ্ট্রপতির জায়গায় দ্রৌপদী মুর্মুকে ‘রাষ্ট্রপত্নী’ বলে উল্লেখ করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি।