তৃণমূলের কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগে কার্যত ঘুরিয়ে সিলমোহর মোদির!

রাজ্যে প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচনের বাকি মাত্র আর কয়েকটা ঘণ্টা। শেষ মুহূর্তের প্রচারে ঝড় তুলেছে, বাম, তৃণমূল, বিজেপি থেকে সব পক্ষ। যা টেক্কা দিয়েছে বৈশাখের তাপপ্রবাহকে। জানুন বিস্তারিত...

তৃণমূলের কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগে কার্যত ঘুরিয়ে সিলমোহর মোদির!
(ফাইল চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: রাজ্যে লোকসভা নির্বাচন শুরুর আগেই তৃণমূলের দীর্ঘদিনের অভিযোগকে কার্যত ঘুরিয়ে সিলমোহর দিলেন নরেন্দ্র মোদি! রায়গঞ্জে নির্বাচনী জনসভা থেকে নরেন্দ্র মোদি তৎকালীন কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে গুজরাতের বিজেপি সরকারের সঙ্গে বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে অনেকে। তৃণমূল সহ রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে কেন্দ্রের ক্ষমতায় এসে কংগ্রেসের দেখানো পথেই পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে এগোচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, এতদিন ধরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যে বঞ্চনার অভিযোগ করে আসছিলেন, মোদির বক্তব্যে সেটাই সত্যি বলে প্রমাণিত হল।

 রাজ্যে প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচনের বাকি মাত্র আর কয়েকটা ঘণ্টা। শেষ মুহূর্তের প্রচারে ঝড় তুলেছে, বাম, তৃণমূল, বিজেপি থেকে সব পক্ষ। যা টেক্কা দিয়েছে বৈশাখের তাপপ্রবাহকে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে যেখানে দুর্নীতি, নারী সুরক্ষা, অপশাসন নিয়ে সুর চরাচ্ছে বিজেপি, সেখানে রাজ্যের শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিভাজন, রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনা নিয়ে পাল্টা সরব তৃণমূল। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে কেন্দ্রের মোদি সরকার রাজ্যের হকের ১০০দিনের টাকা আটকে রাখার পাশাপাশি একাধিক কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নেমেছে তৃণমূল।

রাজ্যের রাজভবন থেকে দিল্লির রাজপথ পর্যন্ত সেই আন্দোলনকে পৌঁছে দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তৃণমূলের সেই অভিযোগকেই কার্যত ঘুরিয়ে সীলমোহর দিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার দলীয় প্রার্থী কার্তিক পালের হয়ে রায়গঞ্জে নির্বাচনী জনসভায় মঞ্চ থেকে মোদির বক্তব্যেই উঠেছে সেই প্রশ্ন। বালুরঘাটের মঞ্চ থেকে কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেন, তিনি যখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেস সরকার গুজরাতকে একাধিক প্রকল্প ও আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করত। গুজরাতের সঙ্গে বৈমাতৃত্ব শুলভ আচরণ করত তৎকালীন কংগ্রেস সরকার।  

আরও পড়ুন: https://www.tribetv.in/West-Bengal-CM-Mamata-Banerjee--announced--to-send-Awas-yoyona-money-on-December

তিনি বলেন, '' অতীতে কংগ্রেস-বিরোধী রাজ্যকে টাকা দিত না। টাকার জন্য দিল্লিতে ঘুরতে হত। তখন আমি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম। কংগ্রেস দেখত, কোথায় ওদের সরকার, কোথায় বিরোধীরা। আজ ছবিটা অন্য রকম। আমি সব জেলার উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ পাঠাই। বাংলাতেও পাঠাই। তৃণমূল চায়, মোদীর প্রকল্প যাতে সাধারণের কাছে না পৌঁছয়। হয় তারা কেন্দ্রের যোজনা বন্ধ করে দেয়, নয়তো নিজেদের স্টিকার লাগিয়ে দেয়। সারা দেশে কোটি কোটি মানুষ আয়ুষ্মান যোজনায় ফ্রি চিকিৎসা পাচ্ছেন। বাংলায় তৃণমূল সরকার সেই সুবিধা দিতে দিচ্ছে না।'' 

আরও পড়ুন: https://www.tribetv.in/bus-accident-at-Jajpur-Odisa-while-travelling-from-Puri-to-Bengal

মোদির এই বক্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে গিয়েছে জোর আলোচনা। রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, মোদির এই বক্তব্য তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূলের করা অভিযোগকেই কার্যত সীলমোহর দিয়ে দিল। তাহলে গুজরাতের বিজেপি সরকারের সঙ্গে তৎকালীন কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার যে বঞ্চনা করেছে বলে নরেন্দ্র মোদি অভিযোগ করছেন, কেন্দ্রের ক্ষমতায় এসে নরেন্দ্র মোদিও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে একই পথে হাঁটছেন! এই প্রশ্নও উঠছে বিভিন্ন মহলে। আর সেটাই যদি সত্যি হয়, তাহলে এতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূল নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে যে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে আসছে, সেটাই প্রমাণিত হলো বলে মনে করছে তৃণমূল সহ রাজনৈতিক মহল। যা, রাজ্যে সাত দফা লোকসভা নির্বাচনের আগে খোদ নরেন্দ্র মোদিই তৃণমূলের হাতে বড় অস্ত্র তুলে দিলেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।