Jhargram Durga Puja: পুরোহিত নয়, শবরদের হাতেই এখানে দুর্গারূপে পূজিত হয় লোধা চন্ডী, জানুন ইতিহাস

এই মন্দিরের বয়স ১০০ বছরেরও বেশি। এখানকার আদি বাসিন্দা লোধা শবর জনজাতি জঙ্গলে শিকার করেই জীবনযাপন করতেন । বিস্তারিত জানতে আরও পড়ুন...

Jhargram Durga Puja: পুরোহিত নয়, শবরদের হাতেই এখানে দুর্গারূপে পূজিত হয় লোধা চন্ডী, জানুন ইতিহাস
স্থানীয় শবরদের হাতে পূজিত হয়ে আসছে এই লোধা চন্ডী (নিজস্ব চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: আমাদের গ্রাম বাংলায় এমন অসংখ্য মন্দির আছে যার ইতিহাস অনেকের কাছেই অজানা। একেকটি মন্দিরের সঙ্গে ওতপ্রতভাবে জড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন লোকগাঁথা, বিভিন্ন রোমাঞ্চকর গল্পকথা। যেমন ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের পাথরা গ্রাম পঞ্চায়েতের পাথরকাটি গ্রামের জয়চণ্ডী মন্দির। লোধা অধুষিত এই গ্রামের জাগ্রত মন্দিরে ৩৬৫ দিনই পুজো করেন লোধা সম্প্রদায়ের মানুষজন। এই মন্দিরে কোনও ব্রাহ্মণ নেই দেবীর নিত্যপূজার জন্য। শুধু দূর্গাপুজোর দিনগুলিতে ব্রাহ্মণ নিয়োগ করা হতো পুজোর জন্য। কিন্তু এবার সেটাও হবে না, লোধা সম্প্রদায়ের মানুষজন এবার ঠিক করেছেন ব্রাহ্মণ নয়, বরং নিজেরাই পুজো করবেন প্রাচীন রীতি মেনে।

পাথরকাটি গ্রামের জয়চণ্ডী মন্দির প্রতিষ্ঠার পিছনে এক অলৌকিক গল্প প্রচলিত আছে। এই মন্দিরের বয়স ১০০ বছরেরও বেশি। এখানকার আদি বাসিন্দা লোধা শবর জনজাতি জঙ্গলে শিকার করেই জীবনযাপন করতেন। এই মন্দিরের বর্তমান পূজারী ছুটু প্রামানিক জানান, কয়েক পুরুষ ধরে তাঁদের পরিবার জয়চণ্ডী মায়ের নিত্যপুজো করে আসছেন। কয়েক পুরুষ আগে তাঁরই এক পূর্বপুরুষ রাম লোধা এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বেশ কয়েকদিন ধরে জঙ্গলে কোনও শিকার পাচ্ছিলেন না। শেষে একদিন তাঁকে দেবী স্বপ্নদেশ দিয়ে বলেন জংলী ধুনো, ফলমুল ও চিটাগুড়ের লাড্ডু দিয়ে পুজো করলেই তিনি সন্তুষ্ট হবেন। এরপর রাম লোধা ছোট্ট মন্দির বানিয়ে দেবীর পুজো আরম্ভ করেন। এরপরই তাঁরা ভালো শিকার পেতে শুরু করেন। যুগ যুগ ধরে লোধা সম্প্রদায়ের লোকজনই দেবীর পুজো করে আসছেন। তাই এবার দুর্গাপুজোর চারদিন তাঁরাই পুজো করবেন। কোনও ব্রাহ্মণ দিয়ে পুজো করা হবে না।

খুবই সাধারণ উপাচারে দেবীর পুজো হয়। জঙ্গলের আদি বাসিন্দা লোধারা সহজ সরল ভাবেই পুজো করেন। প্রথমে জবা ফুল দিয়ে গণেশ পুজো, তারপর কল্কে ফুল দিয়ে মহাদেবের পুজো। আর মা দুর্গার পুজো হয় ১০৮টি পদ্ম দিয়ে। পাথরকাটি গ্রামের জয়চণ্ডী মা খুবই জাগ্রত। তাই দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন পুজো দিতে। আর এখানকার লোধা সম্প্রদায়ের মানুষজন নিজেদের রীতি ও আচার অনুষ্ঠান মেনে মায়ের পুজো করেন নিষ্ঠার সঙ্গে। তাঁদের বিশ্বাস, মা তাঁদের অন্তরেই থাকেন।