লালনের রহস্যমৃত্যু! আর্জি খারিজ হল বিচার বিভাগীয় তদন্তের

লালনের রহস্যমৃত্যুর তদন্ত করছে সিআইডি। দুটি পারস্পরিকভাবে যুক্ত। দীর্ঘ সওয়াল জবাবের পর রায়দান স্থগিত রেখেছিল ডিভিশন বেঞ্চ।

লালনের রহস্যমৃত্যু! আর্জি খারিজ হল বিচার বিভাগীয় তদন্তের

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। কীভাবে মৃত্যু হল লালনের, সেটাই বড় প্রশ্ন। সিবিআই আধিকারিকরা আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও পরিবারের অভিযোগ খুন করা হয়েছে লালনকে। লালনের মৃত্যুতে আদালতে মামলা দায়েওর হয়। এই ঘটনায় জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। 

তিনি বলেন, ''সিআইডি ও সিবিআইয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল ও আছে। বগটুইয়ের ঘটনার পিছনে ষড়যন্ত্র ছিল। প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধানে নিরপেক্ষ বিচারবিভাগীয় তদন্তের আরজি জানাচ্ছি।'' সোমবার সেই মামলার শুনানি শেষ হলেও বাকি ছিল রায়দান। জনস্বার্থ মামলকারীর দুটি বক্তব্য ছিল। আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ''মূলত দু'টি আবেদন করা হয়েছিল। প্রথমত, স্বতঃপ্রণোদিতভাবে জনস্বার্থ মামলাটি যাতে গ্রহণ করে হাইকোর্ট। দ্বিতীয়ত, রাজ্য তদন্তের পক্ষে উপযুক্ত সংস্থা নয়। সিবিআইকে দিয়েই তদন্ত করানো হোক। সেই তদন্তের উপর নজরদারি করুক হাইকোর্ট। তদন্তের গতিপ্রকৃতির দিকে নজর রাখা হোক। লালনের মৃত্যুর সঙ্গে বগটুই গণহত্যা জড়িত। ওই ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত করছে সিবিআই।'' 

এদিকে, লালনের রহস্যমৃত্যুর তদন্ত করছে সিআইডি। দুটি পারস্পরিকভাবে যুক্ত। দীর্ঘ সওয়াল জবাবের পর রায়দান স্থগিত রেখেছিল ডিভিশন বেঞ্চ। বুধবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট করে দেয়, এই মামলায় কোনও তদন্ত বিচারপতি করবেন না। অর্থাৎ হাইকোর্টের নজরদারিতে তদন্ত হবে না। যারফলে জনস্বার্থ মামলাকারীর আবেদন খারিজ হয়ে যায়। বর্তমানে লালন শেখের রহস্যমৃত্যু মামলা তদন্ত করছে সিআইডি। ইতিমধ্যে লালনের গ্রামের বাড়িতে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। লালনের স্ত্রী রেশমা বিবির বয়ানও রেকর্ড করেছেন তদন্তকারীরা। লালনের পরিবারের অভিযোগ, মূলত সিবিআই অফিসাররাই পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে। এক্ষেত্রে গরু পাচার মামলার তদন্তকারী অফিসার-সহ একাধিক সিবিআই আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন রেশমা বিবি। অভিযোগের যথার্থতাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। 

প্রসঙ্গত, গত ২১ মার্চ ভাদু শেখকে তার বাড়ির সামনে খুন হতে হয়। খুনের সময়ও ভাদু লালনের কাছে ছিল। ভাদু খুনের পালটা বগটুই গ্রামে গণহত্যা চলে। অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয় ১০ জনের। এমনকি পরেরদিন সকালেও গ্রামে যেতে সাংবাদিকদের বাধা দেয় লালন। সেই অগ্নিকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ন’মাস পরে ৩ ডিসেম্বর ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেপ্তার হন লালন। তার ৯দিনের মাথায় সিবিআই হেফাজতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় লালনের। নিহতের স্ত্রীর দাবি, খুন করা হয়েছে লালনকে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে সিআইডি।