রাষ্ট্রসঙ্ঘে কাশ্মীর ইস্যু তুলতেই পাকিস্তানকে তুলোধনা ভারতের

যে দেশ আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেয় এবং প্রতিবেশী দেশের সংসদে আক্রমণ করে, তাদের রাষ্ট্রসঙ্ঘের ক্ষমতা নিয়ে বলার মতো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।

রাষ্ট্রসঙ্ঘে কাশ্মীর ইস্যু তুলতেই পাকিস্তানকে তুলোধনা ভারতের

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: কেটে গিয়েছে স্বাধীনতার ৭৫ বছর, এখনও কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে বিরোধ মেটেনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। বুধবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠকেও উঠল কাশ্মীর ইস্যু। বুধবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের মঞ্চে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে সরব হন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো। তার পাল্টা জবাব দিলেন দেশের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও। সন্ত্রাসবাদ নিয়ে কার্যত পাকিস্তানের তুলোধনা করেন তিনি।  

এদিন তিনি জানিয়েছেন, যে দেশ আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেয় এবং প্রতিবেশী দেশের সংসদে আক্রমণ করে, তাদের রাষ্ট্রসঙ্ঘের ক্ষমতা নিয়ে বলার মতো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। বুধবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠক ছিল। বৈঠকের আলোচ্য বিষয় ছিল আন্তর্জাতিক শান্তি ও সুরক্ষা রক্ষা। সেই বৈঠকেই ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিশ্বাসযোগ্যতা কঠিন পরিস্থিতিতে কীভাবে সাড়া দেওয়া হচ্ছে, তার উপরে নির্ভর করে, তা সে প্যান্ডেমিক বা জলবায়ু পরিবর্তন, সংঘর্ষ হোক কিংবা সন্ত্রাসবাদ। এই একই বৈঠকে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি জানান, পাকিস্তান দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে নিরাপত্তা পরিষদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমাদের আঞ্চলিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যাগুলির কার্যকর এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা যেতে পারে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সার্বজনীন ও ধারাবাহিক আনুগত্যের উপর ভিত্তি করে বহুপাক্ষিকতা হওয়া উচিত। 

পাক বিদেশমন্ত্রীর এই বক্তব্যেরই পাল্টা উত্তরে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, আমরা স্পষ্টতই বহুপাক্ষিকতার সংস্কারের দিকে মনোনিবেশ করছি। স্বভাবতই আমাদের নিজস্ব মতামত থাকবে, তবে একটি ক্রমবর্ধমান অভিন্নতা বা এক-কেন্দ্রীকতার দিকে অগ্রসর হতে হবে, যা আর বিলম্বিত করা যাবে না। আমরা যেখানে সেরা সমাধানের খোঁজ করছি, সেখানে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদের হুমকিকে আমরা সাধারণভাবে গ্রহণ করতে পারি না। বিশ্বের কাছে কী কী বিষয় গ্রহণযোগ্য নয়, সেই প্রশ্ন ওঠারই কথা নয়। যেখানে ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেওয়া হয় বা প্রতিবেশী দেশের সংসদে হামলা চালানো হয়, তারা কোনওভাবেই এই কাউন্সিলে বলার অধিকার রাখে না। গত ২১ বছর আগে, ২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানের লস্কর-ই-তৈবা ও জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি দিল্লির সংসদে হামলা চালায়। সংসদ ভবনে হামলা চালায় লস্কর ই তৈবা ও জৈশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিরা। মোট ন'জনের মৃত্যু হয়। যদিও বহু সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তখনও সংসদভবনেই ছিলেন। জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে শহিদ হন মোট ন'জন।

 এদের মধ্যে দিল্লি পুলিশের ছয়কর্মী ছাড়াও ছিলেন সংসদের এক নিরাপত্তা রক্ষী ও এক মালী। এই হামলার মাস্টার মাইন্ড হিসেবে উঠে আসে জইশ ই মহম্মদ নেতা মাসুদ আজহারের নাম। ১৯৯৯ সালে কান্দাহারে বিমান ছিনতাই করে মাসুদকে ভারতের হেফাজত থেকে ছাড়িয়ে নেয় তাঁর সহযোগীরা। তারপরই ঘটে এই হামলা।