সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষকে রক্ষাকবচ কলকাতা হাইকোর্টের

আদালতের অনুমতি ছাড়া এখনই ভাস্কর ঘোষকে গ্রেফতার করা যাবে না। তবে এই মামলায় পুলিশ নিজেদের মতো তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি সিনহা। আরও জানুন...

সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষকে রক্ষাকবচ কলকাতা হাইকোর্টের
(ফাইল চিত্র)

রিমিক মাঝি, কলকাতা: সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষকে রক্ষাকবচ কলকাতা হাইকোর্টের। তবে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। আগামী ১৮ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি। আদালতের রক্ষাকবচ পেলেন বকেয়া মহার্ঘভাতার দাবিতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ। মহার্ঘভাতার দাবিতে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলার অভিযোগ উঠেছিল। সেই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ। 

বুধবার সেই মামলার শুনানিতেই ভাস্কর ঘোষকে আইনি রক্ষাকবচ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিনহা শুনানিতে পরিষ্কার নির্দেশ দিয়েছেন, আদালতের অনুমতি ছাড়া এখনই ভাস্কর ঘোষকে গ্রেফতার করা যাবে না। তবে এই মামলায় পুলিশ নিজেদের মতো তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি সিনহা। পাশাপাশি পুলিশকে অভিযোগকারীর মেডিক্যাল রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৮ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি।

এদিন শুনানিতে ভাস্কর ঘোষের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর খারিজের আবেদন জানান যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের আহ্বায়কের আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়। ভবিষ্যতে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের কাউকে যাতে গ্রেফতার না করা হয়, আদালতের কাছে সেই আর্জি জানিয়েছেন তিনি। এদিন ভাস্কর ঘোষের আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার জন্যই যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ ও অন্যান্য নেতৃত্বকে একাধিক মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষের বিরুদ্ধে মহিলাকে মারধর ও ভ্রূণ হত্যার মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠে। গত ১৬ জুন পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরে অঙ্গণওয়ারি কর্মীদের সমস্যা নিয়ে সিভিপির অফিসে ডেপুটেশন জমা দিতে গিয়ে সরকারি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে ভাস্কর ঘোষ সহ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ১৬ জনের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ, ওই দিন ভাস্কর ঘোষ ভিড়ের মধ্যে এক মহিলাকে মারধর করেন এবং তাঁর ভ্রূণ হত্যা করেন। অপরদিকে, ঘটনার দিন শাসক দলের গুণ্ডাবাহিনীর হাতে মারধরের পাল্টা অভিযোগ করেন ভাস্কর ঘোষ। পান্ডবেশ্বর থানায় ১৬ তারিখ ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিকেল ৫:৩৫ এ আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ জানান সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ। পাল্টা, ওই দিনই সন্ধ্যা ৬.২৪ নাগাদ পাণ্ডবেশ্বর থানায় ভাস্কর ঘোষের বিরুদ্ধে সরকারি অফিসে ভাঙচুরের অভিযোগ দায়ের হয়। 

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Ramesh-Chandran-from-kolkata-planting-tree-to-make-environment-green

সেই অভিযোগে মহিলাকে মারধর বা ভ্রুণ হত্যার বিষয়ে কিছু লেখা ছিল না। গত ২৮ জুন কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে যখন পশ্চিম পাণ্ডবেশ্বর রেল স্টেশন থেকে দুর্গা মন্দির তোলা পর্যন্ত মিছিল করতে যায় সংগ্ৰামী যৌথ মঞ্চ, সেই দিন অভিযোগকারিণী পাণ্ডবেশ্বর থানায় অভিযোগ জানান, ভাস্কর ঘোষ ১৬ তারিখ ডেপুটেশন জমা দেওয়ার ঘটনার দিন তাঁকে মারধর করেন এবং তাঁর ভ্রূণ হত্যা করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ভাস্কর ঘোষের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ৩১৩ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Restaurant-owner-appeal-to-calcutta-high-court-against-TMC-MLA-Soham-Chakraborty

এছাড়াও আরও বেশ কিছু ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। এই অবস্থায় গ্রেফতারি এড়াতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ভাস্কর ঘোষ। বুধবার সেই মামলার শুনানিতেই সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষকে আইনি রক্ষাকবচ দিল বিচারপতি অমৃতা সিনহার সিঙ্গেল বেঞ্চ। আদালতের অনুমতি ছাড়া ভাস্কর ঘোষকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে জানিয়েছে আদালত। তবে গোটা ঘটনায় পুলিশ নিজের মতো করে তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।