অপ্রচলিত শক্তি নিয়ে গবেষণার সুযোগ, মার্কিনমুলুকে ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাক পেল প্রত্যন্ত গ্রামের আব্দুল

তিনদিক সীমান্ত বেষ্টিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ছেলে আবদুল মোতাকাব্বের। সুদূর আমেরিকার পাঁচ পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপ্রচলিত শক্তি নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ পেয়েছে।

অপ্রচলিত শক্তি নিয়ে গবেষণার সুযোগ,  মার্কিনমুলুকে ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাক পেল প্রত্যন্ত গ্রামের আব্দুল
পরিবারের সঙ্গে আব্দুল মোতাকাব্বের (নিজস্ব চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: অপ্রচলিত শক্তি নিয়ে গবেষণায় মার্কিন মুলুকে পাড়ি বাংলার যুবকের। আমেরিকার পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপ্রচলিত শক্তি নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ পেয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ছেলে আবদুল মোতাকাব্বের। তরুণের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত পরিবার সহ গ্রামবাসীরা। 

তিনদিক সীমান্ত বেষ্টিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ছেলে আবদুল মোতাকাব্বের। সুদূর আমেরিকার পাঁচ পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপ্রচলিত শক্তি নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ পেয়েছে সে। স্বামী বিবেকানন্দের স্মৃতিধন্য শিকাগোতে গবেষণার জন্য ডাক পেতেই ২৩ বছর বয়সী এই তরুণের সাফল্যে উচ্ছাসিত পরিবার সহ গ্রামবাসীরা। পাশাপাশি প্রতিশ্রুতি মিলেছে মাসে ২ লক্ষ টাকা ভাতা পাওয়ার। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার আবদুলের বাড়ি কুমারগঞ্জ ব্লকের সমজিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের কৃষ্ণপুর গ্রামে। বাবা তোফাজ্জল হোসেন সরকার পেশায় প্রাক্তন প্রাইমারি শিক্ষক। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রামে তারা বাস করলেও আবদুল উচ্চমাধ্যমিক পড়াশোনার জন্য বালুরঘাটে আসে। পরিবারের পক্ষ থেকে জানা যায় আবদুল ছোট থেকেই বরাবরই পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ ছিল।প্রত্যেক পরীক্ষায় সে অসম্ভব ভালো ফল করে উতীর্ণ হয়েছে।
    

বিষয়ে আবদুল মোতাকাব্বের জানায়,"ছোটবেলা থেকেই আমার জীবনের একটাই লক্ষ্য ছিল, বড় হয়ে গবেষণার কাজ করব।দেশের হয়ে সেবা করবো। আমার দীর্ঘ পরিশ্রমের পরে আমার কাছে এত বড় সুযোগ এসেছে। আজ আমার বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারলাম। ভবিষ্যতে আমি বিজ্ঞানী হয়ে দেশের জন্য কিছু করতে চাই।" 

পাশাপাশি,আবদুল জানায়, তার মতন অন্যান্য ছাত্র ছাত্রীরাও চেষ্টা করে যেন তাদের লক্ষ্যে সফল  হতে পারে।প্রত্যন্ত এলাকা বা পরিবার কোনো কিছুই যেন তাদের লক্ষ্যে বাঁধা নয়।স্কুল শিক্ষক থেকে কলেজ প্রফেসর প্রত্যেকেই সমান তালে তার এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে বিশেষভাবে সাহায্য করেছেন। পাঁচ বছর পর দেশে ফিরে গবেষণা করার পাশাপাশি প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেশের কাজ করতে চায় সে।রাজনৈতিক দিক থেকে একটা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে জনসেবায় নিজেকে নিযুক্ত করতে চায়।এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামের ভবিষ্যত প্রজন্ম যেন সব রকম ভাবে সুযোগ সুবিধা পেতে পারে এটাই তার জীবনের শ্রেষ্ঠ চাওয়া।

তাঁর মা মাহাবুবা বিবি বলেন, "ছোটবেলা থেকেই ওর একটাই ইচ্ছে ছিল। বিজ্ঞানী হওয়ার পাশাপাশি,একটা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে জনসেবায় নিজেকে নিযুক্ত করতে চায়। অনেক পরিশ্রমের ফল পেয়েছে। যতটা পেরেছি ওর পাশে থাকার চেষ্টা করেছি আমরা পুরো পরিবার।ছেলের সাফল্যে আজ আমরা খুবই গর্বিত।আমরা সকলেই খুব খুশি।''  বাবা তোফাজ্জল হোসেন জানান, ছেলের সাফল্যে খুবই খুশি । তবে ছেলে দূরে থাকবে তা নিয়ে মন খারাপ রয়েছে একটু । তবে দেশের জন্য কাজ করবে ছেলে এই ভেবে ভালো লাগছে ।  

প্রসঙ্গত, আবদুলের স্কুলজীবন কেটেছে নিজস্ব জেলায়। ২০১৫ সালে সে কুমারগঞ্জ ব্লকের  আঙ্গিনা বরোইট হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর ২০১৭ সালে বালুরঘাট ললিত মোহন আদর্শ  উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সফল হওয়ার পর ডিগ্রি অর্জনের জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এরপর থেকে গবেষণা নিয়ে পড়াশুনা শুরু হয় তার। ইতিমধ্যেই আমেরিকার পাঁচ পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিবেশ নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ পেয়েছে। জেলার এই প্রত্যন্ত এলাকা থেকে এত বড় জায়গায় পৌঁছে যাওয়া রীতিমত জেলাবাসীকে বিস্মিত করেছে। আবদুল মোতাকাব্বের কথায়, ''আগামী দিনে তার এলাকা কিংবা জেলার যে কোনও প্রান্তের ছাত্র-ছাত্রীরা এই ধরনের সুযোগ পেতে সর্বতো ভাবে সাহায্য করবে।''