মেসির হাতে উঠুক বিশ্বকাপ, প্রার্থনা মিনি আর্জেন্টিনার শিবশঙ্করের

এদিকে শিবশঙ্করের অন্ধ ভালোবাসায় পাড়ার নাম পরিবর্তন হয়ে মিনি আর্জেন্টিনা নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিনি আর্জেন্টিনা যে কাউকে বললে বলে দেবে ঠিকানা।

মেসির হাতে উঠুক বিশ্বকাপ, প্রার্থনা মিনি আর্জেন্টিনার শিবশঙ্করের

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে যে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স খেলবে, সেটা ইতিমধ্যেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। বুধবার রাতে মরক্কোকে ২-০ গোলে পরাস্ত করে ফাইনালের রাস্তা প্রশস্ত করেছে ফরাসি ফুটবল দল। কিন্তু শেষ হাসি কে হাসবেন তা নিয়ে চলছে জোর জল্পনা কল্পনা, তরজা। যদিও মেসির হাতেই কাপ উঠুক চাইছেন বারাসাতের শিবশঙ্কর। শুধু তাই নয়, আর এক ম্যাচ, বিশ্বকাপ পেলে খুশি হবেন মিনি আর্জেন্টিনার এই শিবশঙ্কর। 

মেসি আমার ভাই,আমি আর্জেন্টিনার ভক্ত,আমি মেসি ভক্ত। কলকাতায় যখন এসেছিলো মেসি অনেক দূর থেকে তাকে দর্শণ করেছেন তাকে। এ এক অন্ধ ভক্তের কাহিনি। শুধু ভক্তই নয়, যেন মেসির প্রতি রয়েছে তাঁর গভীর ভালোবাসা। যার কারণে বাড়ি সহ আসবাব পত্র, ঘরের সরঞ্জাম, আসপাশের মানুষগুলোকেও আর্জেন্টিনা রঙে রাঙিয়ে ফেলেছে শিবশংকর। চায়ের দোকান চালান শিবশংকর পাত্র। মেসি-ভক্ত এই আর্জেন্টিনার ভক্ত এবার মেসির হাতেই বিশ্বকাপ দেখতে চান বলেই জানিয়েছেন। বাড়ির বাইরে ভিতর সবটাই মেসি এবং আর্জেন্টিনাকে ঘিরে। ভক্ত এমনও হতে পারে তার জলজ্যান্ত উদাহরণ ইছাপুর নবাবগঞ্জের শিবশংকর পাত্র। শিবশংকরের এই ভালোবাসায় পাড়াটাও যেন আর্জেন্টিনা হয়ে গিয়েছে।

 তার চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে আছে মেসি, দোকানের রঙ নীল সাদা। বাড়ি গোটাটাই নীল সাদা,ঘরের ভিতরে আলমারি থেকে শোকেস, এমনকি সিলিং ফ্যানটাও নীল সাদা। ঘরের দেওয়ালে চারিদিকে মেসির ছবি। শিবশংকর সবসময়ই মেসির ১০ নম্বর গেঞ্জিটা পরে থাকে। এই ভালোবাসা যদি পাগলামো হয় তাহলে পাগলামোই। শিবশংকর আগাগোড়াই আর্জেন্টিনার ভক্ত। আর যখন থেকে মেসি দলের দায়িত্বভার নিয়েছে তখন থেকে মেসির ভক্ত। মেসির জন্মদিনে কেক কাটা থেকে কোনও খেলায় জয় পাওয়ার পর সেলিব্রেশন সবটাই উদযাপন করেন শিবশংকর। শুধু তাই নয়, তাঁর স্ত্রীও স্বামীর এই পছন্দকে নিজের পছন্দ করে নিয়ে সবসময় স্বামীকে উৎসাহ দিয়ে আসছেন।  

এদিকে শিবশঙ্করের অন্ধ ভালোবাসায় পাড়ার নাম পরিবর্তন হয়ে মিনি আর্জেন্টিনা নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিনি আর্জেন্টিনা যে কাউকে বললে বলে দেবে ঠিকানা। প্রথমে বাড়িটার বাইরে নীল সাদা রঙ করা হয়েছিলো, তারপর ২০১১ সালে মেসির আসার পর থেকে ধিরে ধিরে গোটা বাড়ির ভিতর বাইরে আর্জেন্টিনা রঙে রাঙিয়ে তুলেছে শিবশংকর। মেয়ে নেহা পাত্র বাবার এই বিষয়টি পাগলামো মনে হলেও সেই পাগলামি আসলে তার পছন্দের তাই বোঝাতে চান। বাবার পাগলামো ধিরে ধিরে মেয়ের মধ্যেও ঢুকে পড়েছে। ওয়ার্ল্ড কাপে যেমন কোনও খেলা মিস করে না নেহা, ঠিক তেমনই ফুটবলকে ঘিরে কোনও কিছু মিস করতে চাই না। তা ক্লাব ফুটবল হোক কি বিশ্বকাপ। আর্জেন্টিনা খেলার দিন পুজো দিয়ে ঠাকুরের কাছে পার্থনা সবটাই করা হয় পাত্র বাড়িতে। বাড়ির ঠাকুর আসনটাও যে আর্জেন্টিনা রঙে রাঙিয়ে দিয়েছেন। 

বারাসাতের এই শিবশংকরের হাত ধরেই মিনি আর্জেন্টিনা পাড়া আজ সকলের পরিচিত পাড়া হয়ে উঠেছে। শিবশংকর যতদিন বাঁচবে ততদিন আর্জেন্টিনার ভক্ত হয়েই থাকতে চান এবং তার নীলাসাদা রঙে নিজেকে রাঙিয়ে রাখতে চান। তার এই পাগলামোতে সে সবসময় পাশে পেয়েছে পরিবার সহ প্রতিবেশীদের। মিনি আর্জেন্টিনা পাড়া বেঁচে থাকুক শিবশংকর কে সাথে নিয়েই। আজ আর্জেন্টিনা কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে। কাপ জয়ের স্বপ্নে তাই বিভোর বারাসতের শিব শঙ্কর।