তুষার ধসে বিপর্যস্ত নাথু -লা, ঘুরতে গিয়ে অকালে প্রাণ হারালেন ৭ পর্যটক

মঙ্গলবার সন্ধেয় তাঁদের সঙ্গে সিকিমের রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী দেখা করেন। জানা গিয়েছে, মৃত দুই পর্যটকের মধ্যে রয়েছে কলকাতার প্রীতম মাইতি

তুষার ধসে বিপর্যস্ত নাথু -লা,  ঘুরতে গিয়ে অকালে প্রাণ হারালেন ৭ পর্যটক

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: তুষারধসে বিপর্যস্ত সিকিম। ইতিমধ্যেই ছয় পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে এই রাজ্যের দুই বাসিন্দাও। এখনও শতাধিক পর্যটক একাধিক এলাকায় আটকে রয়েছেন। নাথু লা থেকে গ্যাংটক নামার পথে রাস্তা বন্ধের জেরে বিপাকে পড়েছেন তারা। 

ছাঙ্গু থেকে নাথুলা যাওয়ার পথে তুষারধসে মৃতদের পরিচয় জানাল সিকিম সরকার। সাতজনের মধ্যে ২ জন বাঙালি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন কলকাতার বাসিন্দা, আরেকজনের ঠিকানা জানা যায়নি। বাকিদের মধ্যে তিনজন নেপাল ও দুজন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। গুরুতর জখম ১৩ জনের মধ্যে ৭ জন বাংলার বাসিন্দা রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৫ জন কলকাতা ও ২ জন শিলিগুড়ি নিবাসী। আর কেউ আটকে রয়েছে কি না তা এখনও খোঁজ চালাচ্ছে সিকিম প্রশাসন। মঙ্গলবার দুপুরে ছাঙ্গু থেকে নাথু লা যাওয়ার পথে তুষারধসের কবলে পড়ে প্রাণ যায় ৭ পর্যটকের। জখম হন অনেকে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু করে ভারতীয় সেনা। ৮০টি গাড়ি-সহ ৩৫০ জন পর্যটককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। জখমদের গ্যাংটকের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে। 

মঙ্গলবার সন্ধেয় তাঁদের সঙ্গে সিকিমের রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী দেখা করেন। জানা গিয়েছে, মৃত দুই পর্যটকের মধ্যে রয়েছে কলকাতার প্রীতম মাইতি। আরেক বাঙালি পর্যটক সৌরভ রায়চৌধুরি কোন জেলার বাসিন্দা তা স্পষ্ট নয়। জখম বাঙালি পর্যটকদের মধ্যে রয়েছেন শিলিগুড়ির পাপাই সরকার ও রঞ্জিতা দাস। কলকাতার পর্যটকদের মধ্যে রয়েছেন-পুতুল সিং, রাকেশ সিং, সুমিত দাস, তথাগত রায়চৌধুরী ও শুভ্রজ্যোতি। তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিতে নারাজ প্রশাসন। আর তাই বাতিল করা হয়েছে পর্যটকদের পারমিট।

মঙ্গলবার দু'বার ধস নামে নাথুলা থেকে গ্যাংটক  যাওয়ার সংযোগকারী রাস্তা জওহরলাল নেহরু রোডের উপর। যার জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে রাস্তা। প্রায় সাত থেকে আটটি গাড়ি আটকে পড়ে। যেখানে প্রায় ২০ জন পর্যটক ছিল। তাদের মধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়। এদিকে, সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে আৎ নতুন করে উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব হয়নি। ভারী তুষারপাত এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার জেরে উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হয় সেনাকে। একদিকে তুষারপাত, অপরদিকে বরফের পুরু আস্তরণে ঢাকা পড়েছে সিকিমের একাধিক পর্যটন স্থল। পূর্ব সিকিমের ছাঙ্গু, নাথুলা, বাবা মন্দির এলাকায় সম্পূর্ণরূপে বরফে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। 

নাথুলা, হরভজন বাবা মন্দির, জুলুক, গুরুদংমার লেক, ছাঙ্গু লেকের মতো পর্যটন স্থলগুলি বরফে ঢেকে রয়েছে। অসংখ্য পর্যটক সেখানে বেড়াতে গিয়ে বর্তমানে ফেঁসে গিয়েছেন। বরফে ঢাকা সিকিমের একাধিক পর্যটন স্থলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বিপদের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সতর্কতা উপেক্ষা করে পর্যটন স্থলগুলিতে গেলে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে পর্যটকদের। রাস্তায় জমে থাকা বরফের জেরে গাড়ি মাঝপথেই আটকে যাচ্ছে। সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতরও। আগামী তিন থেকে চারদিন সিকিমজুড়ে ভারী তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন করে ধস নামার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না আবহাওয়াবিদরা। আটকে থাকা পর্যটকদের নিরাপদে ফেরাতে তৎপর প্রশাসন ।