দুধের গঙ্গা বইছে ড্রেন দিয়ে, নর্দমায় দুধ ঢেলে 'ভাগীরথী'কে লোকসানে দেখানোর অভিযোগ

যে পরিমাণে দুধ বিক্রি হয় বা কাজে লাগানো যায় তার থেকে প্রচুর পরিমাণে দুধ সংগ্রহ করা হয়। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৬০ লিটার দুধ বেশি হয়। বিস্তারিত জানুন...

দুধের গঙ্গা বইছে ড্রেন দিয়ে,  নর্দমায় দুধ ঢেলে 'ভাগীরথী'কে  লোকসানে দেখানোর অভিযোগ
এভাবে পাইপের মাধ্যমে ড্রেনে ফেলে দেওয়া হচ্ছে দুধ (নিজস্ব চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: প্রতিদিন কয়েক লক্ষ লিটার দুধ ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বহরমপুরের ভাগীরথী দুগ্ধ সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে। এভাবে প্রচুর পরিমাণ দুধ নষ্ট করে দেওয়ায় ভোগান্তির শিকার গোপালকরা। বিগত কয়েক মাসে প্রায় ১৪ লক্ষ ৫৪ হাজার ২০০ লিটার দুই ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভাগীরথী সমবায়ের বিরুদ্ধে। যেখানে বাচ্চারা, মায়েরা দুধ খেতে পান না। এখনও অপুষ্টিতে ভোগে বহু গরিব বাচ্চা। সেখানে দুধের মতো একটি পুষ্টিকর নিত্য প্রয়োজনীয় পানীয় ফেলে দেওয়ায় ক্ষুদ্ধ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী।  

 'দুধ' দুই অক্ষরের এই পুষ্টিকর পানীয় যেখানে সবরকম বয়সী মানুষের পুষ্টির তালিকায় শিরোনামে থাকে। সেখানে লক্ষ লক্ষ লিটার দুধ ড্রেনে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। সূত্রের খবর, প্রায় লক্ষাধিক দুগ্ধ চাষি ভাগীরথী দুগ্ধ সমবায় সমিতির সঙ্গে যুক্ত। এক দশক আগে রাজ্যে প্রথম হওয়া এই দুগ্ধ সমবায় সমিতিকে তিল তিল করে মৃত্যুপথে পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। যে পরিমাণ দুধ কেনা হচ্ছে তা বাজারজাত করা হচ্ছে না। ফলে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার দুধ পাশের পুকুরে ফেলে নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে সবার চোখের আড়ালে। সাধারণত এই দুধ ফেলার কাজ করা হচ্ছে রাতের অন্ধকারে।

এই বিষয়ে ভাগীরথী সমবায় সমিতির সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা জানিয়েছেন, যে পরিমাণে দুধ বিক্রি হয় বা কাজে লাগানো যায় তার থেকে প্রচুর পরিমাণে দুধ সংগ্রহ করা হয়। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৬০ লিটার দুধ বেশি হয়। যা কাজে না লাগার জন্য সেই সমস্ত দুধ নষ্ট হয়ে যায়। যারফলে ফেলে দিতে হয়।  এত পরিমাণ দুধ গ্রামে গ্রামে সমিতির মাধ্যমে গোপালকদের কাছে থেকে দুধের ফ্যাট অনুযায়ী দাম দিয়ে কেনা হয়। তবে ক্ষতিপূরণটা ভাগীরথী শিল্প নয়, এর কিছুটা গোপালকদেরকেউ দিতে হয়। তারা যে দাম পান তার থেকে অর্ধেক দাম দেওয়া হয়। 

ভাগীরথী দুগ্ধ সমবায় সমিতিতে এক সময়ে দুধ, পনির, ঘি ও দই ছিল নজরকাড়া। বর্তমানে আমুল ছাড়াও আরও দু'টি দুধ উৎপাদক সংস্থা বাজারে আসায় লড়াই এখন হাড্ডাহাড্ডি। চাষিদের অভিযোগ, চক্রান্ত করে ভাগীরথীকে পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যদিও সংস্থার এমডি বিজয় অধিকারী বলেন, 'সাধারণত ঘি-এর জন্য ফ্যাট তুলে নেওয়ার পরে সেই দুধ ফেলে দেওয়া হচ্ছে। তবে দুগ্ধ চাষিদের অভিযোগ, বাজারে ফ্যাট বিহীন দুধের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সেই দুধ বাজারজাত করা হচ্ছে না এদিকে বিপুল পরিমাণ দুধ নষ্ট করা নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করে বলেন, ''চার মাসে ১৪ লক্ষ ৫৪ হাজার ২০০ লিটার দুধ ফেলে দেওয়া হয়েছে। জেলার আশা ভরসার জায়গা, ভাগীরথীকে শেষ করে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার জন্য এই চক্রান্ত চলছে।''