বিদ্যালয়ের গাফিলতিতে বিভ্রান্ত ছাত্রী

দায়ভার কার, প্রশ্ন অভিভাবকগণের

বিদ্যালয়ের গাফিলতিতে বিভ্রান্ত ছাত্রী

বিদ্যালয়ের গাফিলতিতে কোয়েল নামের দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর পাল্টে যাওয়া এডমিটে সেক্রেটারির স্বাক্ষর কেটে এক ছাত্রীর নিজের স্বাক্ষর | তাতে বিভ্রান্ত অপর ছাত্রী | ঘটনায় ধন্দ্বে পড়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ |

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জেরে পরীক্ষা কেন্দ্রে বসা অনিশ্চিতের আশঙ্কা এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুরের শরৎকুমারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী কোয়েল দালালের সঙ্গে । বাবা রঞ্জিত দালালের অভিযোগ, দশম শ্রেণীর ছাত্রী গতকাল মায়ের সঙ্গে স্কুলে আসেন মাধ্যমিক পরীক্ষার এডমিট কার্ডটি নিতে। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের হাতে এডমিট কার্ড তুলে দেওয়ার সময় খেয়াল করেননি, একই নাম অথচ পদবী আলাদা । তবে বাড়িতে পৌঁছনো মাত্রই তারা লক্ষ্য করেন কোয়েল দালালের পরিবর্তে "কোয়েল অধিকারীর" এডমিট কার্ড তুলে দেওয়া হয়েছে তাদের হাতে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তৎক্ষণাৎ পরীক্ষার্থী এবং তার অবিভাবিকা জানানো মাত্রই বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ তাদের ভুল বুঝতে পেরে ঘোড়ালিয়া নিবাসী কোয়েল অধিকারী নামের ছাত্রীর কাছ থেকে কোয়েল দালালের এডমিট কার্ডটি আনিয়ে দেওয়া হয়। 

তবে এখানেই সমাধান হয়ে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু, ঘটলো আরো বড়সড়ো বিপত্তি | ওই এডমিট কার্ড হাতে পেয়ে সেক্রেটারি স্বাক্ষরের উপর দিয়েই পুনরায় করা হয়েছে কোয়েল অধিকারী । যদিও এডমিটেড ওপর কোথাও সাক্ষর করার কথা নয়। কোয়েল অধিকারী কোয়েল দালালের পরিচ্ছন্ন এডমিটটি বাড়ি নিয়ে গেলেও কোয়েল দালালের পরিবার দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন | পরীক্ষায় বসা কিংবা পরবর্তী কালে এডমিট এর মতন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সেক্রেটারির সই না থাকা কিংবা কেটে ওই ছাত্রীর নাম বসানো এ বোঝা কতদিন বইয়ে নিয়ে যেতে হবে সেই দুশ্চিনতায়।

আর সেই সমস্যা সমাধানের জন্য আজ বিদ্যালয়ে এডমিট কার্ড সহ ওই ছাত্রী কোয়েল দালাদালালের  অভিভাবকগণ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন। প্রধান শিক্ষিকা লিনা বিশ্বাস উপস্থিত না থাকার কারণে তার অনুমতি ক্রমে বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মিতা কর তাদেরকে আশ্বাস দেন, পরীক্ষায় তিনি যেভাবে হোক বসার ব্যবস্থা করে দেবেন | তবে নতুন অ্যাডমিট কার্ডটি কতদূর কি করা যেতে পারে তার সঠিক উত্তর তিনি দিতে পারছেন না। কারণ এক্ষেত্রে বোর্ড কি একমাত্র প্রিন্ট করার অধিকারী। তবে সে বিষয়েও সহযোগিতা করার আশ্বাস দেওয়া হয়।

যদিও এই আশ্বাস পেয়েও খুশি নন ছাত্রী কোয়েল দালালের অভিভাবকগণ | তাদের দাবি, রোল নম্বর, বাবার নাম এবং ছবি থাকা সত্ত্বেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জেরেই তাদের মেয়ের এডমিটে সমস্যা হয়ে দাঁড়ালো। হাতেগোনা ক'দিন বাকি মাধ্যমিক পরীক্ষার | তারা চান তাদের মেয়ে-র ফ্রেশ এডমিট ব্যবস্থা করুক | বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনওরূপ ব্যবস্থা গ্রহন না করলে তারা দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাবেন বিষয়টি। কারণ প্রথমত, এক্ষেত্রে প্রথম ভুল বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কারণ তারা এই ভুল কাজ না করলে এভাবে উলটপালট হতো না। দ্বিতীয়ত, কোয়েল অধিকারী নামে ওই ছাত্রী সম্পাদকের সই কেটে নিজের সই করে আরও বড় অন্যায় করেছে। 

যদিও এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রত্যেকে তাদের ছাত্রী সেক্ষেত্রে করোর বিরুদ্ধে তারা যেতে চান না | তবে, বিষয়টি সঠিকভাবে অবহিত করতে পারলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে নিশ্চয়ই একটা ব্যবস্থা হবে, কিন্তু তা কোনোভাবেই মাধ্যমিক পরীক্ষার মধ্যে নয়। 

যদিও গোটা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সম্পাদকের সই কেটে নিজের স্বাক্ষর করা কোয়েল অধিকারীর পরিবারের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।  তবে এই নিয়ে গুঞ্জন গোটা স্কুল চত্বরে। অনেক অভিভাবকের মত এবং পূর্ব অভিজ্ঞতা, মধ্যশিক্ষা পর্ষদে গিয়ে নতুন প্রিন্ট আউট নেওয়া অত সহজ নয় | সে ক্ষেত্রে যদি কোনও দুর্ঘটনা জড়িত কারণে হত সে বিষয়টি আলাদা | তবে যেহেতু ইচ্ছাকৃত সই করা হয়েছে তাই কতটা উপকৃত হবে ওই পরিবার তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অন্যান্য অভিভাবকগণ।