প্রায় বন্ধের মুখে বিদ্যালয় পুনরুজ্জীবিত!

পুনরুজ্জীবন দিলেন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা

প্রায় বন্ধের মুখে বিদ্যালয় পুনরুজ্জীবিত!

পাথরপ্রতিমায় শিক্ষা ব্যবস্থায় উলোটপুরান | প্রায় বন্ধের মুখে জুনিয়র হাই স্কুলের পুনরুজ্জীবন দিলেন প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা। 

যখন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষা ব্যবস্থায় দুর্নীতির জন্য বহু ব্যক্তি গারদে দিন কাটাচ্ছে, এমনকি শিক্ষকের অভাবে স্কুল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই প্রাথমিক শিক্ষকদের আপ্রাণ চেষ্টায় পুনরুজ্জীবন লাভ করল প্রায় বন্ধের মুখে থাকা দেবী চক জুনিয়র হাই স্কুল। 

উল্লেখ্য ২০১০ সালে রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকে বেশ কিছু জুনিয়র হাই স্কুল তৈরির কথা ঘোষণা করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। যেখানে শিক্ষালাভ করতে পারবে পঞ্চম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত। সেই মতো ২০১৩ সালে পাথর প্রতিমা ব্লকের রামগঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতে দেবী চক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঢিল ছোড়া দূরত্বে গড়ে ওঠে দেবীর চক জুনিয়র হাই স্কুল। প্রথমে হাই স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দিয়ে স্কুলগুলি চালানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ওই সমস্ত শিক্ষকের বয়স যখন ৬৫ হয়ে যায় তারা অবসর নিয়ে চলে যাবার পর বিদ্যালয় শিক্ষক শূন্য হয়ে যায়। শিক্ষকের অভাবে ছাত্র-ছাত্রী ও স্কুল ছাড়তে থাকে। ঠিক তখনই ত্রাতার ভূমিকায় দেখা যায় প্রতিবেশী দেবী চক প্রাথমিক  বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের।প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা বিনা পারিশ্রমিকে জুনিয়র হাইস্কুলের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেন। আর তাদের সাহায্যে জন্য এগিয়ে আসেন পাথর প্রতিমা উত্তর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্যামল মল্লিক। 

শিক্ষকদের উদ্যোগে জুনিয়র হাই স্কুলে নতুন করে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি করানো হয় | যার কারণে পড়ুয়াদের সংখ্যা এখন ৩২। শিক্ষকদের টাকায় বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ বিভাগ, টয়লেট তৈরি করা ছাড়াও ফুলের বাগান তৈরি ও সহ পাঠক্রমিক ব্যবস্থা, যার মধ্যে ছবি আঁকা, যোগব্যায়, প্যারেড পিটি,ওর নাচ গানেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই বিশাল শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে গিয়ে দুটি স্কুলে ৬ জন ক্যাজুয়াল শিক্ষক-শিক্ষিকা দেওয়া হয় যাদের পারিশ্রমিকের দায়িত্ব নেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্থায়ী শিক্ষকরা। 

এই অভূতপূর্ব কর্মকান্ডে খুশি এলাকাবাসী। তাদের কথায়, তাদের সন্তান-সন্তদিদের পড়াশোনায় কোনও ব্যাঘাত ঘটবে না | তাতে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারবে |

এমন দুর্লভ ঘটনায় যে স্থানীয় পঞ্চায়েতেও খুশির আমেজ তা বলাই বাহুল্য | শিক্ষকদের তৎপরতায় বন্ধের মুখে যাওয়া স্কুল আজ আবার পুনরুজ্জীবিত হয়েছে, তার প্রশংসা করতে ছাড়লেন না স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধি |

তবে বিদ্যালয়ের আবার পুনরুজ্জীবন যে স্থানীয় শিশুদের পড়াশোনায় কোনও বাধা হয়ে দাঁড়ালো না, তাতে খুশি এলাকার একাধিক মানুষ |