ভাঁড়ে মা ভবানী দশা পড়শি দেশের, রমজানের খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে পদপৃষ্ট হয়ে নিহত ২০

গত ৫০ বছরের মধ্যে পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছচ্ছে যে, একমুঠো খাবারের জন্য পদপৃষ্ট হয়ে মরতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

ভাঁড়ে মা ভবানী দশা পড়শি দেশের,  রমজানের খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে পদপৃষ্ট হয়ে নিহত ২০
৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি পাকিস্তানে (ফাইল চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: দিন যত এগোচ্ছে ততই শিয়রে সংক্রান্তি দেখা দিয়েছে ভারতের পড়শি দেশ Pakistan-এর। ২০২৩ সালে দাঁড়িয়ে গত ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে শাহবাজের দেশে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছচ্ছে যে, একমুঠো খাবারের জন্য পদপৃষ্ট হয়ে মরতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। 

রবিবার সর্বভারতীয় এক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গিয়েছে, গত ৫০ বছরের মধ্যে পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সরকারের কোষাগার শূন্য। এই পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া। খাবার থেকে পানীয় সবকিছুর দামই দিন দিন মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সূত্রের খবর, পাকিস্তানে বছরের পর বছর মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। গত মার্চ মাস পর্যন্ত মুদ্রাস্ফীতি 35.37 শতাংশে পৌঁছেছিল। যা প্রায় পাঁচ দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। কারণ, সরকার আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থার (IMF) শর্ত পূরণের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে। শনিবার প্রকাশিত পাক সরকারি তথ্য অনুযায়ী March মাসে Pakistan-এ মুদ্রাস্ফীতি ছিল 3.72 শতাংশ, যেখানে গত বছরের গড় মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল 27.26 শতাংশ। 

পাকিস্তানের এই দুরাবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বছরের পর বছর ধরে আর্থিক অব্যবস্থাপনা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা পাকিস্তানের অর্থনীতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সঙ্কট, প্রবল বন্যার কারণে ২০২২ সালে দেশের এক তৃতীয়াংশ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। যারফলে বহু চাষের জমিও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। চাষের ফলন ভালো না হওয়ায় সেদেশে চাল, ডাল, আটা সবকিছুরই দাম বেড়েছে হুহু করে। এমনকি রমজান মাসেও রেশনের খাবার ও ইফতার সংগ্রহে গিয়ে পাকিস্তানে গত শুক্রবার অন্তত ১২ জন পদপৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। 

জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর করাচিতে শুক্রবার রমজানের ইফতার বিতরণের সময় একটি কারখানায় ভিড়ের মধ্যে কমপক্ষে 12 জন নিহত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, রোজার মাস শুরু হতেই পাকিস্তানের দুর্ভিক্ষের চিত্র যেন আরও প্রকট হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে যে, করাচির এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক শাহিদা উইজারাত বলেন, "যেভাবে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, আমি বিশ্বাস করি দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।" 

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ক্রমাগত পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতা, সন্ত্রাসবাদের মদত, জাতিসঙ্ঘে নিজেদের ধূসর তালিকা থেকে মুক্ত করতে ব্যর্থ দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশ। প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক ঋণ, রাজনৈতিক নেতাদের বিলাসবহুল জীবনযাপন, জঙ্গি কার্যকলাপে টাকা ঢালতে গিয়ে বর্তমানে 'ভাঁড়ে মা ভবানী' দশা এই দেশের। পরিস্থিতি এমন দিকে এগোচ্ছে যে, বহু পাকিস্তানী এখন দেশে ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে চাইছে।