সালিশি সভায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা, ঘরছাড়া পরিবার

সাক্ষী  গ্রামশুদ্ধ লোক। শয়ে শয়ে লোক নাকি হাজির ছিলেন সালিশি সভায়। ঘটনার সূত্রপাত গত ৩০ জুলাই।

সালিশি সভায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা, ঘরছাড়া পরিবার

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: রাজ্যে ডাইনি হত্যা! সালিশি সভা করা! গনৎকারের গননা করে নাম বলে চোর ধরা! এই সব সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ কাজ। সরকারে সংযুক্ত লোকেরা এসবে জড়িত বা মদত করতে পারে না। তা সত্ত্বেও কোথাকার কোন গনৎকার গণনা করে বলে দিয়েছে দোষীর নাম, তাই নিয়ে দাসপুরের চাঁইপাটের চাকীরহাটে বসে গেল সালিশি সভা। 

 সেই সভায় এক দু' টাকা নয় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন গ্রামের মোড়লরা। যা শুনে কার্যত চক্ষু চরক গাছ। এমন কি টাকা দিতে বাধ্য হবে বলে সাদা কাগজে অভিযুক্ত পরিবারের সই করে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ তাঁদের বাড়ির সম্পত্তির দলিল নিয়ে নেওয়া হয়েছে। 

এক দু'টো লোক নয়, সাক্ষী  গ্রামশুদ্ধ লোক। শয়ে শয়ে লোক নাকি হাজির ছিলেন সালিশি সভায়। ঘটনার সূত্রপাত গত ৩০ জুলাই। সেদিন রাত সাড়ে ৯'টার পর চাকীরহাটে কাশীনাথ চাকীর শ্রীহরি ডেকোরেটর্সে আগুন লেগে যায়। ক্ষতি হয় অনেকটাই। পুলিশ এসেও কিভাবে আগুন লাগলো তা বুঝতে পারেনি। মালিকও বুঝতে পারেনি কি কারনে আগুন লেগেছে। ফলে তারা পূর্ব মেদিনীপুরের পালপাড়ায় সুকুমার মাইতির কাছে গণনা করতে যায়। সেখানে গণৎকার সুকুমার মাইতি, ডলফিন ডেকোরেটর্সের মালিক তারকনাথ আড়ির নাম বলে এমনই দাবি কাশীনাথ চাকী সহ মোড়লদের। 

তারপরই তারকনাথকে নিয়ে নানা চাপ তৈরি করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। গত ৬ অগাস্ট সন্ধ্যা থেকে তারকনাথ ও তার দুই ছেলে, ৯ মাসের শিশুর মা দিপালীর উপর প্রকাশ্যে জুলুম ও মারধোর শুরু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। শয়ে শয়ে লোকের সামনে জোর করে স্বীকার করানোর দাবি করে সাদা কাগজে সই করে দলিল কেড়ে নিয়ে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা দাবি করে। আক্রান্তরা ওখান থেকেই পুলিশকে জানালে তারাকনথের পরিবারকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় গ্রামের মোড়লরা। তারা দোষীদের ঘর বাড়ি সম্পত্তি জোর করে দখল নিয়ে টাকা আদায় নেবে বলেও অভিযোগ ওঠে।

মঙ্গলবার রাত বারোটা নাগাদ আসামীদের ছাড়া হলে তারা দাশপুর থানায় ফের যায় অভিযোগ করতে। কিন্তু লিখিত কোনও ডাইরি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। প্রবল চাপে মঙ্গলবার রাতে আড়ি পরিবার প্রাণ রক্ষার দায়ে সবাইকে নিয়ে ঘর ছাড়া হয়। ঘরে তালা। অতঃপর ঘাটালের এসডিপিও অভিযোগ তথ্যটি গ্রহণ করে। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে। অন্যদিকে গ্রামের মোড়লরা অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন।