প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার জট কাটাতে রাজি ভারত-চিন: বিদেশ মন্ত্রক
ওয়েস্টার্ন সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর যে যে সমস্যাগুলি এখনও আছে সেগুলি নিয়ে ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে বিরোধ চলছে ২০২০ সাল থেকে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর যে সমস্যাগুলি আছে, সেগুলি দ্রুত সমাধানের বিষয়ে একমত হয়েছে ভারত-চিন। মঙ্গলবার স্বাধীনতা দিবসের দিন এমনটাই জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।
মঙ্গলবার স্বাধীনতা দিবসে সাউথ ব্লকের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সামরিক ও কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে পুরো বিষয়টির সমাধানের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। ততদিন সীমান্তে যাতে স্থিতিশীলতা ও শান্তি বজায় থাকে, সেই বিষয়ে ভারত-চিন একমত হয়েছে বলে জানিয়েছে সাউথ ব্লক। তবে সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে এমন কোনও ইঙ্গিত নেই যে অবিলম্বে সীমান্তে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওয়েস্টার্ন সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর যে যে সমস্যাগুলি এখনও আছে সেগুলি নিয়ে ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ভারতের দিকে চুশুল-মলডো সীমান্তে ভারত এবং চিনের মধ্যে কোর-কমান্ডার পর্যায়ের যে বৈঠক হয়েছে, তা ১৯ তম বৈঠক ছিল। প্রায় তিন বছরে এই প্রথমবার দু'দিনের কোর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। দু'দিনের সেই বৈঠক শেষে মঙ্গলবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দু'দেশের দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের পরামর্শ মতো চুশুল-মলডোয় দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে।
ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। ঙ্গলবার ভারত ও চিনের তরফে যৌথ বিবৃতি পেশ করে জানানো হয়, সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার মাধ্যমে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা ঘিরে তৈরি সমস্যাগুলির দ্রুত সমাধান খুঁজে বের করতে রাজি হয়েছে দুই দেশ। সীমান্ত ও তার লাগোয়া এলাকাগুলিতে যাতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকে, তা নিয়েও দুই দেশ একমত হয়েছে। সোমবারই ভারতের চুসুল-মল্ডো সেক্টরে ১৯তম সেনাস্তরীয় বৈঠকে বসেছিল ভারত ও চিন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বৈঠকে সীমান্ত প্রোটোকল অনুসরণ এবং দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ এড়াতে সেনাদের মধ্যে পেট্রোলিংয়ের তথ্য় আদান-প্রদান নিয়েই আলোচনা হয়।
দুই পক্ষই দীর্ঘ সময় ধরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার পশ্চিম সেক্টর নিয়ে যে সমস্যা রয়েছে, তা নিয়ে ইতিবাচক ও গঠনমূলক আলোচনা করে বলে জানানো হয়েছে যৌথ বিবৃতিতে। সরকারি সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে ভারতের তরফে দ্রুত সেনা প্রত্যাহারের জন্য প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সমস্ত পুরনো পেট্রোলিং পয়েন্টে যাতায়াতের দাবি জানানো হয়েছিল। তবে চিন সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে কি না, তা জানা যায়নি।
অন্যদিকে ২০২০ সালের এপ্রিল-মে থেকে পূর্ব লাদাখ সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘাত চলছে ভারত এবং চিনের। তারপর থেকে কূটনৈতিক এবং সামরিক পর্যায়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে। কিন্তু তাতে এখনও পরিস্থিতির পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। চার দফায় গালওয়ান উপত্যকা, প্যাংগং সো লেক, গোগরা এবং হটস্প্রিং থেকে ফৌজি সরিয়ে দিয়েছে ভারত এবং চিন। এখনও লাদাখ থিয়েটারে এখনও দু'দেশের কয়েক হাজার সৈন্য মোতায়েন করা আছে। মোতায়েন রাখা হয়েছে অত্যাধুনিক অস্ত্রও।