স্কুল থেকে আর ফেরা হল না বাড়ি, পথ দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক পরিণতি ছাত্রীর

ওই ছাত্রী হাওড়ার অগ্রসেন বালিকা বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীর পড়ুয়া। মৃত ওই ছাত্রীর বাবার নাম মনোজ কুমার শ্রীবাস্তব।

স্কুল থেকে আর ফেরা হল না বাড়ি, পথ দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক পরিণতি ছাত্রীর

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: ফের গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হল এক স্কুল পড়ুয়ার। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে, হাওড়ার লিলুয়ার সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ জগন্নাথ মন্দির এলাকায়। মৃতা ছাত্রীর নাম সিদ্ধি শ্রীবাস্তব (১০)। 

জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রী হাওড়ার অগ্রসেন বালিকা বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীর পড়ুয়া। মৃত ওই ছাত্রীর বাবার নাম মনোজ কুমার শ্রীবাস্তব। হাওড়ার লিলুয়া এলাকার ৯ নম্বর কুন্দন লেনের ৩০২ নম্বর ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ছিল সিদ্ধি। রোজদিনের মতোই স্কুল ছুটির পড়ে ভ্যান গাড়িতে বাড়ি আসত সে। এদিনও তাঁকে বাড়ির একটু আগে নামিয়ে দেয় স্কুল ফেরৎ ভ্যান চালক। সিদ্ধা রাস্তার ধার ধরে হেঁটে বাড়ি ফিরছিল। 

আরও জানা গিয়েছে, আচমকা একটি ৪০৭ গাড়ি এসে তাঁকে সজোরে ধাক্কা দেয়। ধাক্কার জেরে সে মাটিতে পড়ে যায়। তার পায়ের হাড় ভেঙে যায় ও তার মুখ দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে। এরপর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিকে ঘটনার পরেই গাড়ি ফেলে রেখে গাড়ির চালক ও খালাসি দুজনেই এলাকা ছেঁড়ে পালিয়ে যায়। 

এদিকে নাবালিকা সিদ্ধার মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে আসে তার পরিবারে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তায় নো এন্ট্রি চলাকালীন এই লরি ও ছোট গাড়িগুলো এই রাস্তায় ঢুকে পড়ে। গাড়িগুলো সতর্কতা নিয়ে চললে এই ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে না। এক্ষেত্রে গাড়ি চালক ও ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীদের দিকেই অভিযোগের আঙ্গুল তোলেন তাঁরা।

 স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় দত্ত রায় অভিযোগ করে বলেন, ''নো এন্ট্রি চলাকালীন ওভারলোডিং গাড়িগুলো মূল রাস্তা ছেড়ে পাড়ার ভেতরের রাস্তা ধরে। একে পাড়ার রাস্তাতে টোটো, অটোর দাপটে হাঁটবার জো নেই। এর মধ্যে এই গাড়িগুলো ঢুকে পড়লে পথ চলার জায়গা থাকে না। বাচ্চাটি তার বাড়িতে ঢুকতে যাওয়ার সময় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে''। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, পুলিশ প্রশাসন আরও সতর্ক ও সজাগ হলে এই ধরণের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে। গোটা ঘটনাতে এলাকার মানুষ যথেষ্ট ক্ষুব্ধ।

 দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে লিলুয়া থানার পুলিশ। তাঁরা সিদ্ধার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পাশাপাশি ওই ঘাতক গাড়িটিকেও আটক করা হয়। গাড়ির নম্বর প্লেটের সাহায্যে গাড়ির মালিককে খুঁজে বের করার কাজ শুরু করেছে লিলুয়া থানার পুলিশ। 

পাশাপাশি চালক ও খালাশির খোঁজ পাওয়ার জন্য এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হবে বলেই লিলুয়া থানা সূত্রে খবর। এই দুর্ঘটনায় নির্দিষ্ট আইনের ধারায় মামলা রুজু করেছে লিলুয়া থানার পুলিশ। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই লিলুয়া থানা এলাকাতেই অপর এক ছাত্রীর মৃত্যু হয় লরিতে পিষ্ট হয়ে। বারংবার একই ধরণের দুর্ঘটনার জন্য স্থানীয় মানুষ পুলিশ ও প্রশাসনের গা ছাড়া মনোভাবকেই দায়ি করছেন। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকার মানুষের মধ্যে।