ক্লাসের কড়া দিদিমণি রাঁধুনির ভূমিকায়, নতুন স্বাদের মিড-ডে মিলে আপ্লুত পড়ুয়ারা

রাঁধুনিরা রান্না করলেও শিক্ষিকারা পালা করে নজরদারী করেন। অনেক সময় দেখা যায় ঠিকমত  না ধুয়েই রান্না করেন রাঁধুনিরা।

ক্লাসের কড়া দিদিমণি রাঁধুনির ভূমিকায়,  নতুন স্বাদের মিড-ডে মিলে আপ্লুত পড়ুয়ারা

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: মিড-ডে মিল নিয়ে যখন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ভুরি-ভুরি দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে ঠিক তখনই এক অন্য চিত্র দেখা গেল হুগলি জেলার এক স্কুলে। বিদ্যালয়ে আসেনি Mid-Day Meal-এর রাঁধুনিরা। তাহলে কী আজ পড়ুয়ারা অভুক্ত থাকবে? অগত্য উপায়ন্তর না দেখে নিজেরাই হাতে হাত লাগিয়ে লেগে পড়লেন রান্নার কাজে। 

বৃহস্পতিবার হুগলির ভদ্রেশ্বরের ধর্মতলা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে দিদিমণিদের উদ্যোগেই রান্না হয় মিড-ডে মিল। রাঁধুনিদের অনুপস্থিতিতে ভাত, ডাল ও পাঁচমেশালি সবজি রান্না করে খুদে পড়ুয়াদের মুখে তুলে দিলেন শিক্ষিকারা। আর যা সানন্দে খেলো প্রায় ২৫০ জন পড়ুয়া। জানা গিয়েছে, ভদ্রেশ্বরের ধর্মতলা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ৬০০। তাদের মধ্যে ২৫০ জন মিড-ডে মিলের খাবার পাই। স্কুলে রাঁধুনিও আছেন ৫ জন। এদিন ফরজানা খাতুন নামে এক রাঁধুনি ছুটি নিয়েছিলেন। 

অন্যদিকে, একইদিনে হঠাৎ করে কিছু না জানিয়ে বাকি ৪ জনও অনুপস্থিত হয়ে পড়ে। এদিকে রান্নার বাজার হয়ে গিয়েছে। কি করা যায় ভেবে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সুমনা সমাদ্দার এবং সহ শিক্ষিকারা ঠিক করেন নিজেরাই রান্না করবেন। বাচ্চাদের অভুক্ত রাখা চলবে না। শিক্ষিকা মিতালী মুখোপাধ্যায়, নবমিতা চট্টোপাধ্যায়, চায়না মন্ডল, মহুয়া মল্লিক, সুপ্রিয়া মুখোপাধ্যায়রা নিজেরাই সব্জি কেটে গ্যাস জ্বালিয়ে রান্না চাপিয়ে দেন। ডাল-ভাত ও মিক্স ভেজ রান্না করে নির্দিষ্ট সময়েই খেতে দেয় পড়ুয়াদের।

 ধর্মতলা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ''আমার স্কুলে দিদিমনি অশিক্ষক কর্মী সব নিয়ে ৩৮ জন। ভালো মানের মিড ডে মিল বাচ্চাদের পাতে দিতে সব সময় চেষ্টা করি। রাঁধুনিরা রান্না করলেও শিক্ষিকারা পালা করে নজরদারী করেন। অনেক সময় দেখা যায় ঠিকমত  না ধুয়েই রান্না করেন রাঁধুনিরা। বাচ্চাদের খাবারের ক্ষেত্রে কোনও সমঝোতা করা হয় না। এগুলো বলাতেই রাঁধুনিরা রাগে এক সঙ্গে আজ স্কুলে আসেনি। মিড ডে মিল যাতে বন্ধ না থাকে তার জন্য নিজেরাই রান্না করে পড়ুয়াদের খেতে দেওয়া হয়।''

  যে দিদিমনিরা ক্লাসে খুব কড়া তাঁরাই আজ রান্না করে খাওয়াচ্ছেন এতে খুশি পড়ুয়ারা। রান্নার স্বাদও আর পাঁচটা দিনের থেকে আলদা তাই পেট ভরে খেয়েছে তারা। এই বিষয়ে 
স্থানীয় চাঁপদানি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৌসুমী মন্ডল বলেন, ''স্কুলের মিড-ডে মিল রাঁধুনিদের নিয়ে কোনও সমস্যা হয়েছে বলে আমাকে জানিয়েছেন শিক্ষিকারা। আজ সব রাঁধুনি এক সঙ্গে আসেনি। কেন হল সমস্যাটা এক তরফা নাকি দু'দিকেরই সেটা দেখতে শুক্রবার স্কুলে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। স্কুলে মিড ডে মিল বন্ধ রাখা যাবে না।''