Murshidabad News: বাড়ি থাকতেও রাস্তায় দিন কাটছে শ্বশুর শাশুড়ির, কাঠগড়ায় পুত্রবধূ

নিজের বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে ২০২২ সালের অগাস্ট মাসে হাইকোর্টের দারস্থ হন ওই মহিলার স্বামী ও শ্বশুর শাশুড়ি।

Murshidabad News:  বাড়ি থাকতেও রাস্তায় দিন কাটছে শ্বশুর শাশুড়ির, কাঠগড়ায় পুত্রবধূ
বাড়ির দরজার সামনে বসে বিতাড়িত শাশুড়ি (নিজস্ব চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: বউমার অত্যাচারে দীর্ঘদিন ধরে বাড়ি ছাড়া শ্বশুর শাশুড়ি। বাদ যায়নি মহিলার স্বামীও। এমনকি হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও নিজের বাড়িতে ঢুকতে পারলেন না ছেলে ও তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা। স্বামী সহ শ্বশুর-শাশুড়িকে তাড়িয়ে তাঁদের বাড়ি জবর দখলের অভিযোগ উঠল খোদ পুত্র বধূর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে, মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমার পার্বতীপুর গ্রামে। বউয়ের অত্যাচারে দীর্ঘদিন বাড়ি ছাড়া স্বামী ও তাঁর মা-বাবা। বিবাদ এতটাই চরমে ওঠে যে জল গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। যদিও কোর্টের নির্দেশকে থোড়াই কেয়ার বউমার! প্রশাসনের আধিকারিকদের মুখের  উপর দরজা বন্ধ করল অভিযুক্ত পুত্রবধূ।   

 নিগ্রহের চিত্র সর্বত্র রাজনীতির ক্ষেত্রেই হোক বা গৃহস্থে। এমনই এক নিগ্রহের চিত্র উঠে এসেছে কান্দির পার্বতীপুর গ্রামে। যার রেশ পৌঁছেছে হাইকোর্ট পর্যন্ত। ঘটনার সূত্রপাত ২০০৮ সাল থেকে। পার্বতীপুরের বাসিন্দা জিয়ারুল রহমানের সঙ্গে ২০০৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিয়ে হয় বীরভুমের মোল্লারপুরের সনোকপুর গ্রামের বাসিন্দা কবিতা ইসমাতারার। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বিয়ের ২ বছর পর থেকেই শুরু হয় অশান্তি। তাদের একটি ১৪ বছরের মেয়ে ও ৯ বছরের ছেলেও রয়েছে। সংসারে অশান্তি এতটাই চরমে ওঠে যে কবিতা ইসমাতারা তার স্বামী এবং শ্বশুর শাশুড়িকে ১ বছর আগে ঘর ছাড়া করেন বলে অভিযোগ। 

নিজের বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে ২০২২ সালের অগাস্ট মাসে হাইকোর্টের দারস্থ হন ওই মহিলার স্বামী ও শ্বশুর শাশুড়ি। যদিও তার আগে থেকেই বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে অন্য জায়গায় থাকছিলেন জিয়ারুল। এদিকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার পর জিয়ারুলরা কবিতার বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং কোর্টে কেস করেন। এই ঘটনায় পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় যে,  পুলিশি হস্তক্ষেপে তাঁরা নিজেদের বাড়ি ফিরে যাবেন। এছাড়াও অভিযুক্ত বউমা কবিতা ইসমাতারা কোনও রকম সমস্যা সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

জানা গিয়েছে, এরপরই শনিবার জিয়ারুল রহমান ও তাঁর বাবা শামসুর জোহা, মা মমতাজ বেগমকে নিয়ে পার্বতীপুরে নিজেদের বাড়িতে যান। এদিকে তাঁদের সঙ্গে পুলিশ ও কান্দি আদালতের  উকিল থাকলেও নিজের বাড়িতে ঢুকতে গেলে ফের বাধাপ্রাপ্ত হন তাঁরা। একপ্রকার বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হয় তাঁদের। বৃদ্ধ বাবা শামসুর জোহা জানান, তিনি নিজের বাড়ি ফিরে পেতে চান। ওনাদের বের করে দেওয়ার পর হাইকোর্টে মামলা করেন এবং কোর্টের রায় অনুযায়ী ওনারা বাড়িতে ঢুকবেন। তবে অন্য সুর শোনা গেল মহিলার গলায়। কবিতা ইসমাতার কথায়, তিনি বের করে দেননি কাউকে। বিয়ে হয়েছে শ্বশুর বাড়িতেই থাকবেন। ছেলে মেয়ে নিয়ে যাওয়ার জায়গা নেই। 

 কান্দি আদালতের উকিল মাকসাদ হোসেন জানান, মহিলা কোনও ভাবেই কোনও কথা শুনতে নারাজ। পুলিশ মহিলাটিকে সম্পূর্ণ ভাবে সহযোগিতা করছে। পুরো ঘটনায় বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন রয়ে যাচ্ছে। একদিকে অভিযুক্ত মহিলা জানাচ্ছেন, তার স্বামী অন্যত্র বিয়ে করেছেন এবং তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আর কবিতা যেহেতু বিবাহিত তাই মায়ের বাড়ি নয় তিনি শ্বশুর বাড়িতেই থাকবেন বলে জানান। অথচ নিজের বাড়িতে স্থান নেই গৃহকর্তা ও কর্ত্রীর। অন্যদিকে, বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে জিয়ারুল জানান, সে বিয়ে করেনি। কোর্টের রায় অমান্য করে ঢুকতে দেওয়া হল না বাড়ির লোকেদের। এখন দেখার বিষয়টি কোনদিকে গড়ায়।