নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ, নদিয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত তৃণমূলের বিধায়ক

কিছুদিন আগেই করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায়ের বিরুদ্ধে দলীয় পদ পাইয়ে দেওয়ার নামে ১০ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ করেছিলেন তার দলেরই এক কর্মী!

নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ, নদিয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত তৃণমূলের বিধায়ক

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: থাকল না পদ! পদে বসার এক বছর এক মাসের মধ্যেই অপসারিত হতে হল নদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান তথা করিমপুরে তৃণমূল বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায়কে। বৃহস্পতিবার স্কুল শিক্ষা দফতরের যুগ্ম সচিবের তরফে এই নির্দেশিকা জেলাশাসকসহ একাধিক দফতরে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।  

ঐ নির্দেশিকায়  জানানো হয়েছে, "পরবর্তী ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন নদিয়া জেলার জেলা শাসক  শশাঙ্ক শেঠি।'' 

কিছুদিন আগেই করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায়ের বিরুদ্ধে দলীয় পদ পাইয়ে দেওয়ার নামে ১০ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ করেছিলেন তার দলেরই এক কর্মী! সে মামলা এখন কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন। বিগত কয়েক মাসে স্কুলশিক্ষা দফতরে বিমলেন্দু সিংহ রায়ের বিরুদ্ধে বদলির নামে ঘুষ নেওয়ার একাধিক অভিযোগ ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে। যা নিয়ে যথেষ্টই অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। 

 এদিকে তার অপসারণ নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন নদিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রানাঘাট ভারতী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক জ্যোতি প্রকাশ ঘোষ। তার অভিযোগ, "আমার সময় টেট হল, নিয়োগ হল অথচ কোন অভিযোগই নেই। আর একটা সাপ্লিমেন্টারি নিয়োগ নিয়ে এত অভিযোগ কেন? স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সিসিটিভি ও চেয়ারম্যানের চেম্বারে একটা বৃহৎ "আই-হোল" রাখা হয়েছিল - কোন উদ্দেশ্যে সেগুলো টেম্পার করা হলো?''  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুল পরিদর্শকের দাবি "নদিয়া জেলায় মোট ৩৭টি চক্র আছে, সবাইকে উনি উনার বাড়ির চাকর বাকর মনে করতেন, বিধায়ক হওয়ার সুবাদে ক্ষমতার সর্বোচ্চ অপব্যবহার করতেন।'' 

সম্প্রতি উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির পাশাপাশি প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষক নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগে আদালতের নির্দেশে তদন্ত করছে ইডি ও সিবিআই, গ্রেফতার হয়েছেন।

 উচ্চ আদালতের নির্দেশে জেলার ১৯ জন প্রাথমিক শিক্ষক কাজ হারিয়েছেন।  এই প্রেক্ষাপটে যেহেতু এই অপসারণ, সেই কারণে প্রশ্ন উঠছে, মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ এই তৃণমূল বিধায়কের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের পিছনে কি নিয়োগ দুর্নীতির ছায়া রয়েছে? সেই বিষয়টি অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে অপসারিত চেয়ারম্যানের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।